শাবিপ্রবির অচলাবস্থা কাটবে কবে?

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

দীর্ঘ ২৩ দিনেও অচলাবস্থা কাটেনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অফিস খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে একাডেমিক কার্যক্রম। ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চান তারা। এজন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন পরে ভিসির পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের অ্যাকশনের পর ক্ষুব্ধ হয় শিক্ষার্থীরা। পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সারাদেশে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেন ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ১৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক হল ত্যাগেরও নির্দেশ দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে হলে অবস্থান করে। পরে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন কর্মসূচি শুরু করে। আওয়ামী লীগ, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষকদের আশ্বাসের পরও শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি চালিয়ে যান। আন্দোলনকারীদের আর্থিক ‍সুবিধা আসা একাউন্টগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। আটক করা হয় সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এসে শিক্ষার্থীদের বলেন, সরকারের উচ্চ মহল থেকে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এরপর থেকেই অনশন ভেঙে সাংস্কৃতিক আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। অফিসগুলোর তালা খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা। ১৬ জানুয়ারি থেকে ভিসি অধ্যাপক ফরিদ তার বাসাতেই আছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি সিলেট গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর স্বামী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনি এখনো সিলেট যেতে পারেননি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ভিসি পদত্যাগ না করলে ক্লাসে ফিরে যাবেন না তারা। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহিরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক আমিনা পারভীন।

আরও পড়ুন- মধ্যরাতে ছাত্রীদের আন্দোলনে উত্তপ্ত শাবিপ্রবি

এদিকে করোনার দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ক্যাম্পাস খুললেও আন্দোলনের কারণে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেশনজট আরও বাড়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  একজন শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন হচ্ছে। বারবার আশ্বাস দেয়ার পর বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো তৎপরতা নেই। ভিসিও তার বাসায় বসে আছেন। এ অবস্থায় যা ক্ষতি হওয়ার তাতো আমাদেরই হচ্ছে। দ্রুত শিক্ষামন্ত্রী উদ্যোগ নিয়ে এ অচলাবস্থার অবসান ঘটাবেন বলে আশা করি।

আরও পড়ুন- শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলনের শুরু যেভাবে, যে কারণে

ক্লাস ফিরতে চান শিক্ষকরাও। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসী কুমার দাস বলেন, অচলাবস্থা কাটিয়ে দ্রুত ক্লাস শুরু হোক সেটি চাই। শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন তিনি ক্যাম্পাসে আসবেন। কিন্তু পারিবারিক কারণে তিনি এখনো আসতে পারেন নি। আমরা শিক্ষক সমিতি এই অচলাবস্থার অবসান চাই।

দাবি আদায় করে ক্লাসে ফিরতে চান আন্দোলনকারীরা। দ্রুত দাবি পূরণ না হলে আবারও কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা। গতকাল আন্দোলনকারীরা সভা করেছেন। সেখানে আন্দোলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা যায়। আন্দোলনকারীদের একজন শাহরীয়ার আবেদীন জানান, জাফর ইকবাল স্যার সরকারে উচ্চ পদস্থ কারো কাছ থেকে আশ্বস্ত হয়ে আমাদের অনশন ভাঙান। স্যার বলেছেন এ দাবি মেনে না নেয়া হলে ওনাদের সাথেও অবিচার করা হবে। তাই আমরা অনশন থেকে সরে এসেছিলাম। এখনও আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের মামলা প্রত্যাহার ও মোবাইল নাম্বারসহ, ব্যাংক একাউন্টগুলো ঠিক করে দিবে বলে যেসব কথা দেয়া হয়েছিল তা এখনো সেভাবে রাখা হচ্ছে না। এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গতকালকে মোবাইল নাম্বারসহ ৫টি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে৷ আমরা আশা করবো বাকিগুলোও ঠিক করে দেওয়া হবে। আমরা যদি দেখি বারবার আমাদেরকে কথা দিয়ে রাখা হচ্ছে না তাহলে হয়তো আবার কঠোর হতে বাধ্য হবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence