অমাবস্যার চাঁদ বশেমুরবিপ্রবির মেডিকেল অফিসার

বশেমুরবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টার ও লোগো
বশেমুরবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টার ও লোগো  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত চিকিৎসক নিয়োগ প্রদান করা হয় শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য। তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একজন চিকিৎসক থাকলেও তার কাছ থেকে চিকিৎসাসেবা পান না শিক্ষার্থীরা। নিয়মিতভাবেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. অভিষেক বিশ্বাস। তবে এরপরও প্রতি ছয়মাস পরপর তার চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সম্প্রতি গত ১৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোবহান সড়কে স্থানীয় দুই যুবক কর্তৃক হাতুড়ি পেটায় গুরুতর আহত হন বশেমুরবিপ্রবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শরীফ রাজু। তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসা হলেও মেডিকেল সেন্টারে পাওয়া যায়নি চিকিৎসককে। এসময় মেডিকেল সেন্টারে উপস্থিত থাকা নার্সকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে দেখা যায়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

আরও পড়ুন: অর্ধাহারে দিন কাটছে লাইব্রেরিতে কর্মরত অর্ধশত শিক্ষার্থীর

এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষুদ্ধ এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই চিকিৎসককে আমরা কখনোই মেডিকেল সেন্টারে পাই না। তিনি যেনো অনেকটা অমাবস্যার চাঁদের মত। কাগজে কলমে তিনি থাকলেও শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে তাকে পাওয়া যায় না।”

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাজু বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা প্রদান করা। কিন্তু আমরা সেটা পাচ্ছি না। আমরা চাই আমাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হোক এবং কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।”

আরও পড়ুন: ইভটিজিংয়ের অপবাদে বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রকে হাতুড়িপেটা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানান, নিয়মিতভাবেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন অভিষেক বিশ্বাস। এমনকি গত ২২ নভেম্বর মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক না আসায় শিক্ষার্থী কর্তৃক অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি আবেদনপত্রও দিয়েছেন।

নিয়মিত অফিস না করা প্রসঙ্গে ডা. অভিষেক বিশ্বাস জানান তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ এবং তার পক্ষে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সেবা দেয়া সম্ভব নয়। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত না হলেও তার নিজস্ব ক্লিনিক এবং অপর একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মানুযায়ী উপস্থিত হন এবং সেবা প্রদান করেন।

আরও পড়ুন: হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের, আলটিমেটাম

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেন বলেন, “তার অনুপস্থিতির বিষয়ে আমিও কিছুটা অবগত রয়েছি। কিন্তু চুক্তি নবায়ন বা বাতিলের বিষয়টা আমার ওপর নির্ভর করে না।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড এ কিউ এম মাহবুব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এই মুহুর্তে ব্যস্ত রয়েছি, কথা বলতে পারবো না।”

তবে চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির পর চিকিৎসকের অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, ”ডাক্তার ভালো সেবা দিচ্ছেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পরিবারসহ তার ক্লিনিকে বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছেন।”

ছাত্রদের সেবার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন , “১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য যেই সংখ্যক ডাক্তার প্রয়োজন তা নেই। সম্প্রতি আমি দু’জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার বিজ্ঞাপ্তি দিয়েছি এবং চেষ্টা করছি দ্রুত দুজন চিকিৎসক নিয়োগ দিতে।”

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ডা. অভিষেক বিশ্বাসকে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে ৫১  হাজার ২০০ টাকা বেতন-ভাতাদি প্রদান সাপেক্ষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence