হাবিপ্রবিতে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন

নানা আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন
নানা আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন  © টিডিসি ফটো

যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর ) হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি পালনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকাল ৬টা ৪৩ মিনিটে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল ৯টায় হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশীদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজ। এরপর ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি, ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার নেতৃবৃন্দ, কর্মচারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পুষ্পস্তবক অর্পন শেষে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। পরবতীতে তিনি মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সন্ধিক্ষণে শিক্ষার্থীর ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এতে প্রথম পুরুষ্কার পান হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মো. মিরাজুল আল মিশকাত।

এদিকে দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিভিন্ন খেলাধুলার শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য এবং তিনি স্বয়ং ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান প্রদত্ত বাণী প্রদান করেন। তিনি তার বাণীতে বলেন, মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীরতে মহান বিজয়ের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল। পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মহিয়সী নারী জাতির পিতার অনুপ্রেরণাদায়িনী বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব, শহীদ শেখ কামাল, শহীদ শেখ জামাল, শহীদ শিশু শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী জাতির সূর্য সন্তান ত্রিশ লক্ষ শহীদকে। তাঁদের বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করছি। শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো দুই লক্ষ মা-বোনকে।

তিনি তার বাণীতে আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠেছিল বাংলার রক্তস্নাত শিশির ভেজা মাটি, অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সুদীর্ঘ চব্বিশ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। ত্রিশ লাখ শহীদের বুকের রক্ত, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ও অগণিত মানুষের সীমাহীন দুঃখ-দুর্ভোগের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করি। প্রায় ৯২ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সূচিত হয়েছিল এই মাহেন্দ্রক্ষণ। বাংলাদেশের অগ্রগতির ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, এগিয়ে নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে পিতার আদর্শ ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এ পর্যন্ত তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, দুটি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ১টি শতবর্ষী পরিকল্পনা প্রণয়নসহ নানামুখি অর্থনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণ। জাতির পিতার উন্নয়ন ভাবনাকে ধারণ করে তাঁরই রক্ত এবং আদর্শের উত্তরসুরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পযার্য়ে নিয়ে যাচ্ছেন এক অনন্য উচ্চতায়, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের জন্য অনুকরণীয় হিসেবে আবিভূর্ত হয়েছে, বাংলাদেশকে আজ বিশ্ববাসী সম্মান করে, বাংলাদেশ আজ স্বপ্ন দেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার। মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষনে আমরা বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিশ্চয়ই ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলার পতাকা আত্মমযার্দায় বলীয়ান হয়ে উড়বে বিশ্বের বুকে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও বিজয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে সারা দেশের মানুষকে বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা “দেশব্যাপী শপথ বাক্য পাঠ” করান। এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য যে, অনুষ্ঠানগুলোর সঞ্চলনা করেন হাবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক সহকারী অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দীন রাসেল।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence