বশেমুরপ্রবিতে আইনমন্ত্রী

‘দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনও বন্ধ হয়নি তাই আপনাদের শিক্ষিত হতে হবে’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক  © ফাইল ছবি

দেশের বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্র থামাতে তরুণদের শিক্ষিত হয়ে জনগণের পাশে থাকার আহবান জানিয়েছেন  আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ রোববার (২৯ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে আইন অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: আইনি পর্যালোচনা' শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

এছাড়াও তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার, চার নেতার হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ গণহত্যার বিচারের ব্যবস্থা করেছেন এবং অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। এখন তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখা। এর জন্য তরুণদেরকে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনও বন্ধ হয়নি তাই আপনাদের শিক্ষিত হতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে জনগণের সাথে থাকতে হবে।”

আইন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমানের সঞ্চালনায় এবং উপাচার্য ড. এ.কিউ.এম মাহবুবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো: আনিসুল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: আনিসুল হক বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার অর্থ বাংলাদেশকে হত্যা করা। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিনষ্ট করা। তারা চেয়ছিলো বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করতে। এর প্রেক্ষিতেই জিয়াউর রহমান ক্ষমতা লাভের পর কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন পাস করে এবং খুনীদের যাতে বিচারের মুখোমুখী হতে না হয় সেটি নিশ্চিত করে।”

তিনি আরো বলেন, “জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা সেটি বিতর্কের বিষয়। কারণ হচ্ছে তার কর্মকাণ্ডে ভারতে যাওয়া ছাড়া, জেড ফোর্স নামের একটা ভুয়া বাহিনী ছাড়া আমরা কখনো দেখিনি যে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেছেন। সে কারণে তাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলা সঠিক হবে কিনা সেটা মনে হয় বিতর্কযোগ্য।”

এসময় আইনমন্ত্রী আরও বলেন, “খালেদা জিয়াও খুনীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছেন আর এরশাদ খুনীদের রাজনৈতিক দল গঠন করার সুযোগ দিয়েছেন। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় অবশেষে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। দীর্ঘদিন এই দেশের মানুষ কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে পারেনি কারণ এই দেশে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। কিন্তু এখন এই দেশের মানুষ যেকোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে পারবে এবং বিশ্বাস রাখতে পারবে একদিন তারা বিচার পাবেই।”

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, “শোকের মাস আগষ্ট মাসকে আমরা অনেক সময় অভিশপ্ত আগস্ট বলে থাকি। কারন ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট এবং ২০০৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা একই সূত্রে গাঁথা। তাই যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তাদের সাথে কখনোই আপস করা যাবে না এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রয়েছি, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী তাদের সতর্ক থাকতে হবে একতাবদ্ধ থাকতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. এ. কিউ. এম মাহবুব বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সাহসীকতা দেখিয়েছেন সেটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যদিও দুঃখজনক বিষয় হলো যারা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী ছিলো তাদের আমরা এখনও বিচারের আওতায় আনতে পারিনি। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও এইসব কুশীলবদের খুঁজে বের করার যে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সেটি প্রশংসনীয় এবং আমরা আশা করি তাদেরও বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”

এছাড়া অনুষ্ঠানে বশেমুরবিপ্রবির আইন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। এর পাশাপাশি জুম প্লাটফর্মেও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সংযুক্ত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ