সেমিস্টার ফি’র ৫২৫ টাকা মওকুফ করেছে হাবিপ্রবি
- আব্দুল মান্নান, হাবিপ্রবি
- প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২১, ০৫:১৪ PM , আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২১, ০৬:০৪ PM
সারাদেশে করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল সরকারি, বেসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের অক্টোবরে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা সেমিস্টার ফি এর অকার্যকর ফি সমূহ মওকুফের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি জানায়।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সে সময় কৃষি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাসকে আহবায়ক করে একটি কমিটি করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিল, পরিবহন ফি, কেন্দ্রীয় সংসদ ফি, কমন রুম ফি, স্কাউট ফি সহ বেশ কিছু ফি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে মওকুফ করার সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। তাই সেমস্টার ফি'র ৫২৫ টাকা মওকুফ করেছে হাবিপ্রবি।
এ বিষয়ে উক্ত কমিটির সদস্য ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ জানান, শিক্ষার্থীদের অকার্যকর ফি'র ৫২৫ টাকা বাদ দেয়া হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা সেভাবেই এনরোলমেন্ট করছে।
বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সৈয়দা জাহানারা আফরোজ স্বাক্ষরিত গত ২৬ জুলাই ২০২১ তারিখে অফিস আদেশে লেভেল -৩ সেমিস্টার-১ এর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসার জন্য কোর্স ক্রেডিট (২১.৫*১৫০=৩২২৫/-) টাকা, প্রতি সেমিস্টারের অন্যান্য ফি (বিদ্যুৎ, পরিবহন, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, ক্রীড়া, কমরুম ও রোভার স্কাউট ফি ৫২৫ বাদে) ৮৫০ টাকাসহ বিলম্ব ফি ছাড়া ৪০৭৫ টাকা জমাদান পূর্বক পরীক্ষায় বসার কথা বলা হয়।
অকার্যকর ফি কমানোর ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড.মোঃ সাইফুর রহমান জানান, যতদিন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেওয়া না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অকার্যকর ফি সমুহ মওকুফ করার যে সিন্ধান্ত তা চলমান থাকবে।
তবে শিক্ষার্থীদের অকার্যকর ফি বাবদ ৫২৫ টাকা কমানো হলেও ক্রেডিট ফি বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা যেখানে ক্রেডিট প্রতি ১৫০ টাকা ফি দিচ্ছে সেখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ফি প্রতি ৬৬ টাকা, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ টাকা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ টাকা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০ টাকা (গড়ে), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ টাকা, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ টাকা, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১০ টাকা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ টাকা। ফলে অকার্যকর ফি কমানো হলেও অতিরিক্ত ক্রেডিট ফি'র কারনে যে দুশ্চিন্তা বা দুরাবস্থা তা তেমন ফলদায়ক হয়নি বলে মন্তব্য শিক্ষার্থীদের।
মোহাম্মদ ফয়সাল লিখেছেন, যারা এনরোলমেন্ট করবে তারা ৫২৫/- ও দিতে পারবে। শুধু শুধু এই টাকা না নিয়ে দরদ দেখানোর কোন কারণ নাই।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান বলেন, 'পরীক্ষা ফি কমানোর ব্যাপারে আমরা খুব শীঘ্রই আলোচনায় বসবো। আমি উপাচার্য হিসেবে একাই সব সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, আমাকেও একটি কাঠামোর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পুরো বিষয়টি নির্ভর করবে হিসাব শাখা এবং সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তের উপর। তবে আশা করছি শিক্ষার্থীবান্ধব সিন্ধান্তই হবে।