হাবিপ্রবিতে জেলহত্যা দিবস পালিত

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেল হত্যা দিবস পালিত
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেল হত্যা দিবস পালিত  © টিডিসি ফটো

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু সহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। 

এসময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম। তবে শ্রদ্ধা নিবেদনে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা.মো. ফজলুল হক, কৃষি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস , জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদার, আই আর টি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো.তারিকুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো.খালেদ হোসেন, সহকারী প্রক্টর ড. মো. রবিউল ইসলাম সহ আরও অনেক। 

শুরুতে উপাচার্যের পক্ষ থেকে পুষ্প মাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপরে ক্রমান্বয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ , কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদ।

প্রসঙ্গত ৩ নভেম্বর বাঙ্গালি জাতির জীবনে ১৫ আগস্টের পর আর একটি কলঙ্কময় দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বর্বরোচিতভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার কিছুদিন পরই বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য, মেধাশূন্য করতে বঙ্গবন্ধুর আজীবন রাজনৈতিক সহচর, জাতীয় চার নেতাকে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে ।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড এবং ৩ নভেম্বরের জাতীয় ৪ নেতার হত্যাকান্ড একই সুত্রে গাথা।

যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, যারা কোনোদিন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট চায়নি সেই পরাজিত শত্রুরাই পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য, বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করেন বঙ্গবন্ধুকে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা ভেবেছিল এদেশকে পাকিস্তান রাষ্ট্রে পরিনত করতে পারবে। কিন্তু সেখানে বাধা হয়ে দাড়ায় এই জাতীয় ৪ নেতা। আর তারই ফলশ্রুতিতে ৩রা নভেম্বরের এই নির্মম ও নিষ্ঠুর তম জেল হত্যা৷

এই জাতীয় ৪ নেতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর অনুপুস্থিতিতে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব পালন করে এদেশের জনগনকে একত্রিত করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে লাল সবুজের পতাকা উচিয়ে ধরেছেন। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র বিনির্মানেও ছিল তারা অগ্রপথিক। আর সেটাই কাল হলো তাদের।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঘাতকদের প্রধান শত্রুতে পরিনত হন এই জাতীয় চার নেতা। তাইতো ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের নিরাপদ সেলে নির্মমভাবে খুন হতে হয় তাদের। চার নেতা সন্তানরা হারায় তাদের পিতাকে, দেশও হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

কারাগারের নিরাপদ আশ্র‍য়ে থাকা অবস্থায় এমন নির্মম, বর্বর,জঘন্য এবং নৃশংশ হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।সেই থেকে ৩ নভেম্বর দিনটিকে জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয় এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ