চার আন্দোলনের স্মরণে পাবিপ্রবির ৪ হলের নতুন নাম
- পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩০ PM , আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:১৬ PM
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক চারটি আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) তাদের চারটি আবাসিক হলের নামকরণ করেছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও ২০২৪ সালের ৬ জুলাই গণজাগরণ—এই চারটি সংগ্রামকে কেন্দ্র করেই হলগুলোর নাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের বৈঠকে এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গৌরববোধ ও সচেতনতা জাগিয়ে তুলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২৬ জুলাই) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম রিজেন্ট বোর্ডে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রী হল-১-এর নাম হয়েছে ‘মাতৃভাষা হল’, যা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ। ভাষার অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতেই এই নামকরণ।
ছাত্র হল-১-এর নামকরণ করা হয়েছে ‘স্বাধীনতা হল’, যা জাতির ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধারণ করে। এটি সেই লড়াইয়ের প্রতীক, যেখানে রক্ত দিয়ে লেখা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের নাম।
ছাত্রী হল-২-এর নামকরণ করা হয়েছে ‘গণতন্ত্র হল’, যা আমাদের ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানকে মনে করিয়ে দেয়। যা ছিল স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন। ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে এই নামকরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গুলশান চাঁদাবাজিতে আপন দুই ভাই—বাবা পাম্পের কর্মচারী, বেতন ৬ হাজার টাকা
এ ছাড়া ছাত্র হল-২ পেয়েছে ‘৬ জুলাই হল” নাম, যা ২০২৪ সালের ৬ জুলাই তারিখে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের উদ্যোগে সংঘটিত পাবনায় গণঅভ্যুত্থানের সূচনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিন পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই পাবনা জেলায় আন্দোলনে শুরু হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘হলগুলোর নাম নিয়ে অনেক পর্যালোচনা করা হয়। এ দেশের ইতিহাসের সঙ্গে মিল রেখে চারটি হলের নতুন করে নাম রাখা হয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বাঙালির আত্মস্বীকৃতির আন্দোলন শুরু হয় ভাষা আন্দোলন থেকে। এরপর আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বিজয় পাই। এরপর আবার স্বৈরাচার আমাদের চেপে ধরে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা স্বৈরাচারকে পরাজিত করি। এই চারটি আন্দোলন আমাদের ইতিহাস। চারটি হলের নতুন নামকরণের মাধ্যমে সেই ইতিহাসকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে দিয়েছি।’