অবশেষে কুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকলেন শিক্ষার্থীরা

কুয়েট ক্যাম্পাস
কুয়েট ক্যাম্পাস  © সংগৃহীত

কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বন্ধ ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ৩টার পর থেকে ‘লং মার্চ টু কুয়েট’ কর্মসূচির মাধ্যমে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন।

এ সময় ফটকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তাদের কেউ বাধা দেয়নি। রোকেয়া হলের প্রভোস্ট আশরাফুল আলম, ছাত্র কল্যাণ–বিষয়ক দপ্তরের সহকারী পরিচালক সহকারী অধ্যাপক রাজন রাহাসহ কয়েকজন শিক্ষক এসে কুয়েট ফটকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে না ঢুকতে অনুরোধ করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং তারা ভেতরে ঢুকতে চান। পরে শিক্ষকরা আইডি কার্ড দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে বলেন। শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে একে একে ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করেন।

কুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ থাকবে আজকের মধ্যে হল খুলে দিয়ে শত শত শিক্ষার্থীকে মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু করে দেবেন।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভিসি মহোদয় অতি দ্রুত ক্লাস খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

হল খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, হল বন্ধ করা হয়েছে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে। আমি ভিসি মহোদয়ের কাছে যাবো হল খোলার ব্যাপারে জানাবো।

এর আগে বেলা সোয়া তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। কুয়েটের প্রধান ফটকের বাইরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষক কথা বলতে যান। এ সময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে না ঢুকতে অনুরোধ করেন। বেলা দুইটার দিক থেকে শিক্ষার্থীরা দু–একজন করে কখনো আবার ছোট ছোট দলে কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে থাকেন। নতুন করে কোনো শিক্ষার্থী এলে আগে থেকে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা তাঁদের হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তখন দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কুয়েটের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। যাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। আহতদের কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।  

পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের একাডেমিক ভবনে তালা দেওয়ার পাশাপাশি ছয় দফা দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সব আবাসিক হল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।  

আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। যদিও প্রশাসনের নির্দেশ মতো ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে হল ত্যাগ করতে শুরু করেন তারা।  

সংঘর্ষের ঘটনায় কুয়েট প্রশাসন খানজাহান আলী থানায় ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে। ঈদের ছুটি শেষে ১৫ এপ্রিল প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরুর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ আছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তরিক।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence