সাবেক উপাচার্যের ছবি পদদলিত করলো যবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

  © টিডিসি ফটো

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর ছবি পদদলিত করেছে যশোর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ শিক্ষার্থীরা। এ সময় অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সেলিনা হোসেন ড. আনোয়ারকে তাঁর সরাসরি শিক্ষক দাবি করে লিফটের দরজার সামনে ফ্লোর থেকে উপাচার্যের ছবিটি তুলে নেন। এর প্রেক্ষিতে ড. সেলিনার অফিস কক্ষের নেম প্লেট খুলে ফেলে বিচার দাবি করেছেন তারা।

আজ সোমবার (০৪ নভেম্বর) দুপুর পৌনে দুইটায় যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে দেওয়াল বোর্ডে টাঙানো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুহূর্তের ছবি টানানোর বোর্ড থেকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিতির ছবি তুলে নিয়ে পদদলিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী। 

এ সময় তারা প্রশাসনিক ভবনের পাঁচ তলায় লিফটের দরজার সামনে ড. আনোয়ারের ছবি ফেলে রাখে। এর পরপরই ড. সেলিনা হোসেন লিফট প্রবেশের সময় উপাচার্যের ছবিতে পা না দিতে ফ্লোর থেকে উপাচার্যের ছবি হাতে তুলে নেন। তখন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। ফ্লোর থেকে ছবি তোলার বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বরাবর মৌখিক অভিযোগও করেন।

 এ সময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাবেক শিক্ষার্থী রাশেদ খান (রসায়ন), মারুফ হাসান সুকর্ণ (আইপিই), আব্দুল্লাহ আল মামুন (সিএসই) এনএফটি বিভাগের স্নাতকোত্তরের বর্তমান শিক্ষার্থী এইচ এম মারুফ হাসান, এফএমবি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আল মামুন লিখন, ইইই বিভাগের মো. সজীব হোসেন, ইএসটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাবীব আহমেদ শান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ফ্লোর থেকে ছবি উঠানোর বিষয়ে ড. সেলিনা হোসেন বলেন, ছাত্রজীবনে অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন স্যার আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে উনি আমাকে পাঠদান করেছেন। আমার একজন শিক্ষকের ছবিতে আমি পা রাখবো, তা হতে পারে না। আমি স্যারের ছবিতে পা দিতে পারব না বলে সেই ছবি শুধু তুলে নিয়ে আসছি। শিক্ষার্থীদের সাথে আমার কোনো মনোমালিন্য নেই। এখানে আনোয়ার স্যারকে উপাচার্য হিসেবে নয় শুধুমাত্র আমার একজন শিক্ষক হিসেবে তাঁর ছবিটা ফ্লোর থাকতে দেয়নি। শিক্ষার্থীরা একজন উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করতে পারে, বিভিন্ন উপায়ে প্রতিবাদ করতে পারে সেটা তাদের অধিকার। তাদের ন্যায্য দাবির সাথে আমিও একমত। আমি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে আছি, থাকবো। 

এ বিষয়ে যশোর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও যবিপ্রবির আইপিই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মারুফ হাসান সূকর্ণ বলেন, যবিপ্রবিতে স্বৈরাচার দোসরদের কোনো চিহ্ন থাকবে না, সেই হিসেবে সাবেক উপাচার্যের ছবি ও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে তাঁর বিভিন্ন ছবি শিক্ষার্থীরা ছিড়ে ফেলে। এ সময় লিফটের দরজার সামনে ফ্লোরে লাগানো ছবি তুলে ফেলেন ড. সেলিনা ম্যাম। ম্যামের এ কাজটি শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচারের প্রতি সম্মান দেখানো ও  স্বৈরাচার পুনর্বাসন হিসেবে দেখছে। এ বিষয়ে উপাচার্য স্যারের কাছে  মৌখিক অভিযোগ করেছি ও স্যার এ ঘটনার বিচার করার আশ্বাস দিয়েছেন।

ড. সেলিনা হোসেনের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ড. আনোয়ার হোসেন স্যারের ছবিতে কেউ চাইলে পা দিবে, কেউ না চাইলে দিবে না। কিন্তু লিফটের প্রবেশ মুখে তার ছবি রেখে লিফটে যারা প্রবেশ করবে তাদের সবাইকে এই ছবিতে পা দিতে বাধ্য করার তারা কে? ড. আনোয়ার হোসেন শুধু ম্যামের উপাচার্য না, উনার শিক্ষক ও। একজন শিক্ষকের ছবিতে ম্যাম পা না দিতে চাইতেই পারেন। এটা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। কিন্তু এই নেতা সেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এসে আমাদের শিক্ষকদের নেম প্লেট খুলে তাকে অপমান করেছেন। আমরা শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে বসে এই বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence