বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের এসি বন্ধে নোটিশ, কর্মকর্তাদের চালু

  © ফাইল ফটো

বারবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নোটিশ দিয়ে সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনিক ভবনে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের অফিসেগুলোতে সবচেয়ে বেশি এসি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে নোটিশে শিক্ষার্থীদের গুটি কয়েক বিভাগে থাকা  ক্লাসরুম ও ল্যাবের এসি ব্যবহারে নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনিক ভবনের এসি ব্যবহারের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। 

ইঞ্জিনিয়ার এস, এম, এস্কান্দার আলী সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক উপ-কেন্দ্রে ১০০০ কেভিএ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার বিদ্যমান যাহা সর্বোচ্চ ৮০০ কিলোওয়াট ব্যবহার উপযোগী। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির ফলে বৈদ্যুতিক চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে তাপ প্রবাহের ফলে বৈদ্যুতিক চাহিদা উপ-কেন্দ্রের ক্ষমতার চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে তাই বৈদ্যুতিক উপ-কেন্দ্রের অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখতে সকাল ১০.০০ হতে ৩.০০ ঘটিকা পর্যন্ত বিভিন্ন ভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ করতে হচ্ছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সকাল ১০.০০ হতে ৩.০০ ঘটিকার মধ্যে বৈদ্যুতিক হিটার, রাইস-কুকার ও আয়রন ব্যবহার না করা, বৈদ্যুতিক এয়ারকুলার (এসি) ২৫-২৬ ডিগ্রি সে: এ ব্যবহার করা, শ্রেণি কক্ষে এয়ারকুলার (এসি) ব্যবহার না করা, অফিস কক্ষে অবস্থান না করলে এসি, ফ্যান ও লাইট বন্ধ রাখ, সকাল ১০.০০ হতে ১.০০ ঘটিকার মধ্যে বেশি বৈদ্যুতিক ক্ষমতার সম্পন্ন ল্যাব যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করা এবং বৈদ্যুতিক পাম্প মটর সকাল ১০.০০ আগে এবং ৩.০০ ঘটিকার পরে চালু করা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অ্যাকাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের রুমগুলোতে এসি সংযোগের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈদ্যুতিক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের সক্ষমতার বাইরে। প্রশাসনিক ভবনে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের অফিসেগুলোতে সবচেয়ে বেশি এসি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে নোটিশে শিক্ষার্থীদের গুটি কয়েক বিভাগে থাকা  ক্লাসরুম ও ল্যাবের এসি ব্যবহারে নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনিক ভবনের এসি ব্যবহারের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। 

আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তুহিন বাদশা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা ল্যাব ও লাইব্রেরির পড়াশোনা বিরতিহীনভাবে চালিয়ে নিতে পারে। তাছাড়া গণরুম গুলো বিদ্যুৎ ছাড়া গণকবরে পরিণত হয়। অথচ আমাদের প্রশাসন নিজেদের সাব- স্টেশনের সক্ষমতা না বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে লোডশেডিং চাপিয়ে দিচ্ছে, যা দুঃখজনক এবং প্রশাসনের অপরিপক্ব ও আন্তরিকহীনতার বহিঃপ্রকাশ।” 

এসিসিই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, “তীব্র তাপদাহে বারবার লোডশেডিং এর জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রজেক্টের কাজগুলো ঠিকমতো করা যাচ্ছে না।ডাইনিং চালু না থাকায় খাবার রান্না করা যাচ্ছে না। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। তাও শিক্ষার্থীদের বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারীরা এসির নিচে কাজ করছেন। লোডশেডিং এড়াতে প্রশাসন যেন দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।”

এ বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) সরাফত খান বলেন, “অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিকে হঠাৎ করে অনেক এসি সংযোজন করা হয়েছে যা আমাদের প্লানের বাইরে ছিল। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ অপচয়ের কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রায় এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে। খরচের কিছু ব্যাপার আছে  এ ব্যাপারে উপাচার্য স্যার আন্তরিক আছেন। আমরা তার সাথে পরামর্শ করে কাজ করছি এবং কিছু মালামালের অর্ডার দিয়েছি। আমরা খুব দ্রুতই সমাধানের চেষ্টা করবো।”

এ বিষয়ে উপাচার্যের সাথে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

সর্বশেষ সংবাদ