বাসের সিট দখলকে কেন্দ্র করে সিনিয়রকে পেটালেন জুনিয়র শিক্ষার্থী

বাঁ হতে অভিযুক্ত ইমন, আহত আসিফ এবং অভিযুক্ত তাসনিম
বাঁ হতে অভিযুক্ত ইমন, আহত আসিফ এবং অভিযুক্ত তাসনিম  © সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বাসের সিট দখলকে কেন্দ্র করে জুনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক এক সিনিয়রকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে খুলনাগামী ডাবল ডেকার বাস বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পর এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে খুলনা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী ডাবল ডেকার বাসে অবৈধভাবে সিট দখল করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নোমান আহমেদ তাসনিম। এসময় পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ বাঁধা দিলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে বাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানোর পর তাসনিম আসিফের ওপর হামলা করেন। এতে তিনি চোখে-মুখে মারাত্মক  আঘাত পান।

পরে আহত অবস্থায় আসিফকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে চোখের সার্জারির জন্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নোসা চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সার্জারি শেষে বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাসনিম বলেন, বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা খুলনার নিয়মিত যাত্রী নই, বাসে ওঠার পরে আমি আমার বন্ধুর জন্য সিট রাখতে গেলে একজন আপু জানান এভাবে সিট রাখারর নিয়ম নেই। আমি তখন বিষয়টি আমার জানা নেই বলে জানাই এবং নিজের ভুল শিকার করে দুঃখ প্রকাশ করি। বিষয়টা এখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল কিন্তু এরপরও বাসে থাকা পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে রুঢ় আচরণ করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আরও বলেন, তিনি রূঢ় আচরণ করার পরেও আমি তার নিকট আমার ভুলের জন্য আবারও দুঃখ প্রকাশ করি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর বাস থেকে নামার সময় একজন শিক্ষার্থী তার নিকট ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাকে গালি দিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন। আমি বিষয়টি শুনতে পেয়ে প্রতিবাদ জানাই। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে পাশে থাকা একটি কাঠ দিয়ে আমার হাতে আঘাত করেন। তার আঘাতে আমি হাতে মারাত্মক আঘাত পাই এবং আমার ৯০ হাজার টাকা মূল্যের ফোন নষ্ট হয়ে যায়। পরে আমি তাকে পাল্টা ঘুষি দেই এবং তার হাতে থাকা কাঠটি কেড়ে নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করি।

এই ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, কাঠ হাতে তাসনিম এবং লাঠি হাতে একই বিভাগের ইমন শেখ বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা চত্বর থেকে ছেলেদের হল গেটের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান হামলার পর পালানোর উদ্দেশ্যেই এই দুই শিক্ষার্থী লাঠি এবং কাঠ নিয়ে ছুটছিলেন।

এদিকে, এর আগে ২০২২ এর আগস্টে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাসনিম, ইমনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ফেসবুক কমেন্টের জেরে মারধরের অভিযোগ এনেছিলেন একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরমান মাসুদ। ওইসময় অভিযুক্তদের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছিল ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।

এ বিষয়ে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান বাপন চন্দ্র কুরি বলেন, অভিযুক্তের বিচারের বিষয়টি প্রক্টর মহোদয় দেখবেন। তবে যেহেতু এই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও একই ধরনের একটি অভিযোগ ছিল তাই সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. মো: কামরুজ্জামান বলেন, আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence