শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের

মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম  © ফাইল ছবি

৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় সুপারিশপ্রাপ্ত কারিগরি শিক্ষকদের এমপিও দ্রুত কার্যকর এবং ঠুনকো অজুহাতে বাতিল হওয়া এমপিও আবেদন সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথ আলাপকালে এ আশ্বাস দেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব।

কাম্য শিক্ষার্থী, কাম্য পাসের হার, কাম্য পরীক্ষার্থী না থাকার কারণে শিক্ষকদের ১৪২টি এমপিও আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এই বিষয়টি ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশপ্রাপ্তদের ঘারে বর্তায় না। বিষয়টি সমাধানে শিক্ষকরা আন্দোলন করেছেন। বিষয়টি সমাধানে আপনি উদ্যোগ নেবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকদের আন্দোলন কিংবা এমপিও ফাইল রিজেক্টের বিষয়টি আমার জানা নেই। কারিগরির ডিজির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানে অবশ্যই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকরা যোগদানের দিন থেকে বেতন পেলেও কারিগরি শিক্ষকরা পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী-প্রশ্নের জবাবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আরও বলেন, ‘এখন জরুরি সভায় যাচ্ছি। বিষয়গুলো কীভাবে সমাধান করা যায় সেটি অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করব।’

এর আগে গতকাল রবিবার দুই দাবিতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। পরে বিষয়গুলো নিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল খায়ের মো. আক্কাস আলীর সঙ্গে আলোচনা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। সভায় শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন মহাপরিচালক।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা জানান, ‘৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একই প্যানেল থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষকদের মধ্যে বেতন কাঠামো ও এমপিও প্রদানে চরম বৈষম্য বিদ্যমান। মাউশি অধিভুক্ত শিক্ষকরা সময়মতো এমপিও সুবিধা পেলেও কারিগরি শিক্ষকদের একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে এমপিও বঞ্চিত অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।

তারা বলেন, সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও অনেক শিক্ষকের এমপিও ফাইল “কাম্য শিক্ষার্থী সংখ্যা”, “কাম্য পরীক্ষার্থী সংখ্যা” ও “কাম্য পাশের হার” পূরণ না হওয়ার অজুহাতে বাতিল করা হয়েছে, যা নবীন শিক্ষকদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে। নিয়োগের সময় এসব শর্ত সম্পর্কে কোনো পূর্ব অবহিতকরণ না থাকায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, বৈষম্যমূলক ও মানবিকতাবিরোধী।

শিক্ষকরা জানান, করোনা-পরবর্তী বাস্তবতায় শিক্ষার্থী সংকট একটি জাতীয় সমস্যা হলেও শুধুমাত্র কারিগরি শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এসব শর্ত কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। বর্তমানে প্রায় ১৪২টি এমপিও ফাইল বাতিল রয়েছে এবং আরও বহু ফাইল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।

শিক্ষকবৃন্দ অবিলম্বে সকল শর্ত শিথিল করে বাতিলকৃত ১৪২টি ফাইলসহ এমপিও আবেদনকৃত সকল শিক্ষকের এমপিও দ্রুত কার্যকর করা এবং যোগদানের তারিখ থেকে বেতন প্রদানের দাবি জানান।

তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন। অন্যথায় শিক্ষক সমাজ শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে, যার সম্পূর্ণ দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!