প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে সর্বশেষ যা জানাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয়  © ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান, অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ নিয়োগ হবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। চলতি ডিসেম্বর মাসে এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারির কথা থাকলেও তা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। আগামী জানুয়ারি মাসে নীতিমালা জারি করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই প্রথম ধাপে নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

তবে মন্ত্রণালয় তাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে না বলে আশঙ্কা করেছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে। রিটের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। এ নির্দেশনার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না। এছাড়া নির্বাচনের পূর্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ এ পদে নিয়োগ হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। এজন্য নির্বাচনের পর এ পদগুলোতে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা হতে পারে বলে জানা গেছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে আদালতের নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর পর এ পদগুলোতে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি নির্বাচনের পূর্বেই প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে। সেজন্য কাজ করা হচ্ছে। তবে সরকারের নির্দেশনা না পেলে এ কার্যক্রম নির্বাচনের পর শুরু করা হবে।’

পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ, চূড়ান্ত হয়নি নম্বর
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকাশ হতে যাওয়া গেজেটে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ নিয়োগ হবে বাছাই পরীক্ষার মাধ্যমে। তবে কত নম্বরে এ পরীক্ষা সেটি চূড়ান্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে এনটিআরসিএর বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ কত নম্বরে পরীক্ষা হবে, মৌখিক পরক্ষায় কত নম্বর থাকবে তা এনটিআরসিএর নির্বাহী ঠিক করবে।

এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গেজেটে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ হবে বাছাই পরীক্ষার মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কত নম্বরের মূল্যায়ন তা চূড়ান্ত করবে এনটিআরসিএর নির্বাহী বোর্ড। যদিও কমিটি ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের প্রস্তাব করেছিল। তবে সেটি গেজেটে উল্লেখ করা হয়নি।’

এর আগে দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ হতো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির (ম্যানেজিং কমিটি) মাধ্যমে। তবে এই প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেন, রাজনৈতিক প্রভাব, স্বজনপ্রীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল ব্যাপক। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ইচ্ছানুযায়ী প্রধান নিয়োগ দেওয়ার ঘটনাও ছিল নিয়মিত। এসব অনিয়ম বন্ধে এবং দক্ষ প্রশাসনিক নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

গত ৬ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ. জেড. মোরশেদ আলীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান, সহকারী প্রধান, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও সমমানের সব পদে নিয়োগ দেওয়া হবে এনটিআরসিএর মাধ্যমে। এটি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। তার আগের দিন ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসের এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরারও জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন প্রতিষ্ঠান প্রধান বা অধ্যক্ষ পুরো প্রতিষ্ঠানের নীতি ও মান নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাই মেধাভিত্তিক যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্ব গড়েই দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!