প্রথমবারের মতো পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় এলো মোংলা বন্দরে
শুল্ক বৃদ্ধি: ভারতকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানমুখী আমদানিকারকরা
- বাগেরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২৬ PM , আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৫ PM

শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ভারতকে বাদ দিয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙর করে চিটাগুড়বাহী পানামার পতাকাবাহী জাহাজ এমটি ডলফিন-১৯। তখন বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকদের স্বাগত জানায়।
এর আগে গেল ২২ জানুয়ারি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই করে মোংলার উদ্দেশে রওনা দেয় জাহাজটি। ৭ মিটার ড্রাফট ও ১৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজটিতে ৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিটাগুড় রয়েছে। পুরো চিটাগুড় খালাস শেষে কিছু অংশ মোংলার ইউনাইটেড রিফাইনারি অ্যান্ড বাল্ক স্টোরেজ লিমিটেডে পরিশোধন করা হবে, বাকি অংশ রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়িতে সড়ক ও নৌপথের মাধ্যমে নেওয়া হবে।
এর আগে বাংলাদেশি ফিডমিলগুলোর জন্য ভারত থেকে আমদানিকৃত চিটাগুড় ব্যবহার করা হতো। ভারত এ পণ্যে রপ্তানি শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ব্যয় কমাতে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়েছে। এতে চিটাগুরের দাম কমবে বলে জানান এই আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান পি অ্যান্ড পি ট্রেডিংয়োর প্রোপাইটর আনোয়ারুল হক।
আরও পড়ুন: ‘বেস্ট ব্যাংকিং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ পেল ইসলামী ব্যাংক
তিনি বলেন, ‘একসময় বাংলাদেশের ১৩টি সুগার মিল ছিল। এই মিলগুলো যখন সচল ছিল, তখন বাংলাদেশ থেকে চিটাগুড় রপ্তানি করা হতো। আমাদের প্রতিষ্ঠান ১৯৮৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে চিটাগুড় রপ্তানি করেছে। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসত বাংলাদেশে। কিন্তু বেশির ভাগ মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে আমরা ভারত থেকে চিটাগুড় আমদানি করতাম। কিন্তু ভারত হঠাৎ চিটাগুড় রপ্তানিতে শুল্ক বৃদ্ধি করে দেয়। ফলে তাহলে তারা চিটাগুড়ের দাম বেড়ে যায়। বিকল্প হিসেবে আমরা পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করেছি। আশা করি পশুখাদ্য তৈরির কোম্পানিগুলোকে আমরা কম দামে সরবরাহ করতে পারব৷ যা দেশের পশু লালন-পালন সেক্টরকে সমৃদ্ধ করবে বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) এমডি শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, নতুন নতুন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হলে বন্দরের আয় ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি পায়। আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মোংলা বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান বন্দরের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: অনার এক্স৫বি সিরিজের সাথে গ্রামীণফোনের এক্সক্লুসিভ অফার
চিটাগুড় বা মোলাসেস সুগার মিলের বর্জ্য জাতীয় একটি পণ্য শিল্পের ভাষায় যাকে বাই প্রোডাক্ট বলে। মূলত সুগার মিল থেকে চিনি উৎপাদনের সময় যে গাঢ়, চিটচিটে ও চিনিসমৃদ্ধ উপজাত পণ্য সংগৃহীত হয় তাকে চিটাগুড় বলে। বাংলাদেশে যখন ১৩টি সুগার মিল চালু ছিল, তখন চিটাগুড় রপ্তানি করে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হতো। তবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশি সুগার মিলগুলো বন্ধ হতে থাকে। বর্তমানে অল্পকিছু সুগার মিল সচল রয়েছে বাংলাদেশে। যদি বাংলাদেশের সব কটি সুগার মিল সচল রাখা যায়, তাহলে চিটাগুড়সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা লাগত না। দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হতো না বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।