আগাম শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি
- হাসান শিকদার, মানিকগঞ্জ
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৯ PM
শীতকালীন সবজি মানেই ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা মানিকগঞ্জের কৃষকদের উৎপাদিত সবজিকে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করে থাকেন অনেক সবজি ব্যবসায়ী। শীতের মৌসুমে ঢাকা ও তার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার আড়ৎদার এবং সবজি বিক্রেতাদের ভিড় জমে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন সবজির বাজারে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় মানিকগঞ্জের বেগুন, শশা, ফুলকপি, বাঁধা কপি, গাজরসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মানিকগঞ্জে মাঠের পর মাঠ সবুজ আর লাল ফুলে ভরে উঠেছে শীতের আগাম শিম গাছ। ফুলকপি ও বাঁধাকপিরও বাম্পার ফলন হয়েছে মাঠজুড়ে। সবজির ভালো দাম থাকায় মধ্যরাত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি থেকে সবজি সংগ্রহ, বিক্রি ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা।
এবার হেমন্তে আগাম শীতের শাক-সবজি চাষে তুলনামূলকভাবে বেশি লাভ হওয়ায় খুশি কৃষকরা। সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে তারা লাখ লাখ টাকার আয়ের আশা করছেন। সাটুরিয়া উপজেলার কৃষক ফরিদ হোসেনের বলেন, কয়েক বিঘা জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলাসহ নানা সবজি চাষ করেছি। আগাম উৎপাদনের কারণে কপি বর্তমানে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখন প্রচুর লাভ হচ্ছে।
সজিব মিয়া নামের এক তরুণ কৃষক বলেন, সাটুরিয়া, সদর ও সিংগাইরের জমিতে প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়, যা ঢাকার চাহিদা পূরণ করছে। ভোর রাত চারটা থেকে কপি ও শিম কেটে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করছি। শিমের ভালো দাম মিলছে। তবে যত বেশি উৎপাদন হবে, চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে দামও কমে আসবে। তাই অনেক আগে থেকে কষ্ট করে আগাম চাষ করছেন।
কৃষকদের উৎসাহিত করতে এবং রোগ-বালাই থেকে শাক-সবজিকে রক্ষা করতে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শাজাহান সিরাজ জানান, সবজি চাষাবাদের কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এ খাতে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ১১ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির আগাম চাষাবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় একশ হেক্টর বেশি।
সবজির বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফোটার পাশাপাশি সাধারন ভোক্তাদের মধ্যেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।
ভোক্তাদের সংগঠন কনজুমার এ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) মানিকগঞ্জ জেলার সভাপতি এবিএম শামসুন্নবী তুলিপ বলেন, মানিকগঞ্জে এবার শীত মৌশুমে সবজির বাম্পার ফলন হওয়ায় সাধারণ ভোক্তারা স্বস্তিতে আছে, আমরা আশা করি আগামীতেও সবজির বাজার সাধারন ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেেই থাকবে তবে সবজির মান যেন ঠিক থাকে সে বিষয়ে কৃষি বিভাগের নজরদারি আরও বৃদ্ধি করতে হবে।