নীতিমালা হলে সান্ধ্য কোর্স এর অর্ধেকও থাকবে না

  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যা্লয়ের সক্ষমতা, জাতীয় চাহিদা ও শিক্ষার গুণগত মান বিবেচনায় নিয়ে সান্ধ্য কোর্স নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও সান্ধ্য কোর্স নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির প্রধান অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে যেভাবে সান্ধ্য কোর্স পরিচালিত হচ্ছে, নীতিমালা করা হলে এভাবে চালােনো যাবে না। তখন নীতিমালার শর্ত পূরণ করেই কোর্সের অনুমোদন নিতে হবে। নীতিমালা প্রণীত হলে সান্ধ্য কোর্সের সংখ্যা এর অর্ধেকও থাকবে না। মঙ্গলবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সান্ধ্য কোর্স বিষয়ে অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বলেন, আসলে আমরা সান্ধ্য কোর্সের বিপক্ষে না। আমরা এটিকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে চাই। সান্ধ্য কোর্সের যাত্রা হয়েছিল পেশাজীবীদের মানোন্নয়নের জন্য। শুরুতে তাদের পেশাগত মানোন্নয়নে তিন মাস ও ছয় মাসের বিভিন্ন সার্টিফিকেট কোর্স পরিচালিত হতো। পরে একটি পর্যায়ে গিয়ে কিছু বিভাগ সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করতে থাকে। স্নাতকোত্তরের জন্য নিয়মিত একটি প্রো্গ্রাম থাকা সত্ত্বেও আবার ইভিনিংয়ে কেন চালু করা হলো? কয়েকটি বিভাগ নানা নামে দুই-তিনটি সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামও চালু করল। আমাদের নিয়মিত প্রোগ্রামে ভর্তি করা হয় বছরে একবার। তারা সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামে বছরে তিনবারও ভর্তি করাচ্ছে। অনেক বিভাগ নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও সান্ধ্য কোর্স খুলে বসে আছে। এগুলো কেন? এমনকি এসব কোর্স চালাতে বাইরে থেকে শিক্ষক এনেও পড়াতে হচ্ছে। তার মানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতার বেশি চাপ সৃষ্টি করেছে এসব সান্ধ্য কোর্স। এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না। তাই এসব সান্ধ্য কোর্স নীতিমালার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সান্ধ্যকালীন কোর্সের আয় বিষয়ে তিনি বলেন, একটি ফ্যাকাল্টি নাকি বছরে ৭০-৭৫ কোটি টাকা আয় করে সান্ধ্য কোর্স থেকে। এসব টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে আসে না কেন? বলা হচ্ছে, ফ্যাকাল্টির উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে। সেটি ঠিক আছে। তবে এসব অর্থ আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে আসতে হবে। পরে বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের প্রয়োজনীয়তার আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ড থেকে খরচ করা হবে।

শিক্ষকদের সান্ধ্য কোর্সে অতি আগ্রহ বিষয়ে তিনি বলেন, একজন শিক্ষক শুধু পাঠদান দেবেন, তা ঠিক নয়। তাঁকে গবেষণা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সময় দিতে হবে। এখন যদি একজন শিক্ষক শুধু ক্লাসই নেন। তাহলে সেটি গুণগত শিক্ষার প্রতিবন্ধক। তাই একজন শিক্ষক কয়টি কোর্স পড়াতে পারবেন, সেটিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সবমিলে সান্ধ্য কোর্সের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে।

যৌক্তিকতা যাচাই কমিটির প্রতিবেদন জমা দিতে প্রায় নয় মাস লেগেছে। এখন পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে নীতিমালা প্রণয়ন সম্ভব কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে নাসরিন আহমাদ বলেন, আসলে যৌক্তকতা যাচাই কমিটির আহ্বায়ক বেশি সময় লাগার কারণ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব পালন ও কয়েক দফায় তথ্য সংগ্রহের কারণে রিপোর্ট জমা দিতে দেরি হয়েছে। তবে তাদের কাজটি আমাদের নীতিমালা প্রণয়নের কাজকে এগিয়ে রাখবে। এ ছাড়া নীতিমালা প্রণয়নের টিমও অনেক বড়। আশা করছি, পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে নীতিমালা প্রণয়ন সম্ভব হবে।

অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে প্রায় ছয় ঘণ্টার তর্ক-বির্তকের পর গতকাল রাতে সান্ধ্য কোর্স পরিচালনার জন্য একটি সময়োপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। নীতিমালা প্রণয়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদকে প্রধান করে ১৮ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগামী পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করে জমা দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নীতিমালা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সান্ধ্য কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence