সান্ধ্য কোর্স সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

সর্বোচ্চ সান্ধ্য কোর্স থাকা ৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
সর্বোচ্চ সান্ধ্য কোর্স থাকা ৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে দেশের উচ্চশিক্ষায় সবেচেয়ে আলোচিত বিষয় সান্ধ্য কোর্স। ইভিনিং, ডিপ্লোমা, স্পেশালাইজড, প্রফেশনাল— এমন বিভিন্ন নামে সান্ধ্য কোর্স কার্যক্রম চলছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। প্রায় ২০টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে এ ধরনের কোর্স চালু রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সান্ধ্যকালীন কোর্স রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৪টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অর্ধশতাধিক সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে।  

জানা যায়, দেশে সান্ধ্য কোর্স প্রথার সূচনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই। ২০০২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের চারটি বিভাগে সান্ধ্য কোর্স চালু করা হয়। গত দেড় দশকে তা অনেক গুণ বেড়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সান্ধ্য কোর্স চালু রয়েছে, যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও সান্ধ্যকালীন এসব কোর্স বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির ৫২তম সমাবর্তনে সান্ধ্য কোর্সের কঠোর সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মো. আবদুল হামিদ। গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তনে তিনি বলেন, একশ্রেণীর শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন, যাতে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। নিয়মিত কোর্স ছাড়াও বাণিজ্যিক কোর্সের মাধ্যমে প্রতি বছর হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা কতটুকু লাভবান হচ্ছেন, এ ব্যাপারে প্রশ্ন থাকলেও একশ্রেণীর শিক্ষক ঠিকই লাভবান হচ্ছেন। তারা নিয়মিত নগদ সুবিধা পাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছেন। আবার কিছু শিক্ষক আছেন, যারা নিয়মিত কোর্সের ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন। কিন্তু সান্ধ্য কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে তারা খুবই সিরিয়াস।

রাষ্ট্রপতির সমালোচনার পর গতকাল সান্ধ্য কোর্স বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ না করলে আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দিয়েছে ডাকসু নেতারা ।

সান্ধ্য কোর্স বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বছরের শুরুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি সান্ধ্য কোর্স বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেন। সেটিকে অনুশাসন হিসেবে নিয়ে গত মে মাসে সান্ধ্য কোর্সের যৌক্তিকতা যাচাইয়ে ডিন পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সান্ধ্য কোর্স বিষয়ে যে মতামত দেবেন, সে আলোকে পর্যায়ক্রমে সান্ধ্য কোর্স বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দেখুন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স বন্ধ ঘোষণা

সান্ধ্যকালীন কোর্সের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে চালু রয়েছে সন্ধ্যা কোর্স। গত বছর সব ধরনের সান্ধ্য কোর্স বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ইবি কর্তৃপক্ষ। যদিও এরপর শিক্ষক সমিতির অনুরোধে পুনরায় কোর্সগুলো চালু করতে বাধ্য হয় প্রশাসন।

দেখুন: সান্ধ্য কোর্স বন্ধ ঘোষণা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও

আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি করে বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সান্ধ্যকালীনে কোর্স চালু রয়েছে। 

এর বাইরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চার, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইটি করে, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে সান্ধ্য কোর্স চালু রয়েছে। 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন,  সান্ধ্য কোর্স বন্ধসহ ১৩টি নির্দেশনা দিয়ে উপাচার্যদের চিঠি দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সান্ধ্য কোর্স  বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আশা করছি, অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও তা অনুসরণ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence