সাত কলেজ সমস্যা সমাধানে কী কী করা যেতে পারে!

  © টিডিসি ফটো

শুরুতেই বলে রাখি এই সমস্যার মূল হোতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন মাননীয় উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক স্যার ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য হারুন উর রসিদ স্যার। আজকে এই দুইজন মানুষের ব্যক্তিগত ঝামেলার দায় বহন করতে হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী এবং সাত কলেজের প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীদের কে।

ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সাথে সাত কলেজের কোন দ্বন্দ্ব বা সংঘাত নেই আর থাকার কথাও না। সাত কলেজকে আমরা আমাদের প্রতিবেশীর চোখেই দেখি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সাত কলেজের কতো সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে তার হিসাব নেই। কতশত খেলাধুলার প্রতিযোগিতা হয়েছে সেসব প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে অংশগ্রহণ করেছে। কই তখন তো কোন ছিল না ঘাত সংঘাত, ছিলোনা মান অভিমান।

কিন্তু হটাৎ করে অমানিশার কালো মেঘের মতো সম্পর্কের মাঝে দেওয়াল হয়ে দাঁড়াল সাত কলেজ সমস্যা আর এর কুশীলব হলেন আরেফিন-হারুন স্যার।

উনাদের ব্যক্তিগত সমস্যার বলি হচ্ছে আজকে প্রায় ২ লক্ষ ২০ হাজার শিক্ষার্থী। একদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্তিত্ব সংকটে আর অন্যদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে মহামূল্য সময় কেড়ে নিচ্ছে এই প্রশাসিক অচলায়তন। এই উটকো সমস্যার দরুন উভয় পক্ষই আজকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আজকে মনে হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্মজন্মান্তরে দ্বন্দ্ব অথচ এরকমটি কখনোই ছিল না।।

আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহনকারী লাল বাস সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আটকে দেয়। ঢাবির শিক্ষার্থীদের দেখলে তারা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যা কখনোই কাম্য ছিল না।

অপরদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথেও অনেক সময় ঢাবির শিক্ষার্থীরা অশোভন আচরণ করে যা কখনোই কাম্য ছিল না।।
এই যে আমাদের মাঝে এক সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এটা কিন্তু পুরোপুরিভাবে ঢাবি ও সাত কলেজ সমস্যার কারণে। আগে কিন্তু এমন দ্বন্দ্বময় সম্পর্ক আমাদের মধ্যে ছিল না।

যাইহোক, অনেক অনুযোগ অভিযোগ আছে থাকবে যেহেতু একটি সমস্যা সৃষ্টি হয়ে গেছে। তাই আমি এবং আমরা চাইবো যতদ্রুত সম্ভব এই সমস্যার একটি সুষ্ঠু এবং যৌক্তিক সমাধান দেওয়া হোক।

এই সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষ যা যা করতে পারে...

১. আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত তালিকা থেকে বাতিল করা উচিত কেননা এতে সাত কলেজের স্বকীয়তা বিনষ্ট হচ্ছে। সাত কলেজের আছে নিজস্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ঢাকা কলেজের বয়স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও বেশি। সুতরাং, এই অধিভুক্তির দোহায় দিয়ে তাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দেওয়া হচ্ছে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কেন অন্যের পরিচয় নিয়ে চলবে, তাদের তো পরিচয় দেওয়ার মতো অনেক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। তাই আমি চাই সাত কলেজ স্বতন্ত্রভাবে চলুক। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজ উভয়ের জন্য মঙ্গল।

২. সাত কলেজ পরিচালনার জন্য একটি সম্পূর্ণভাবে আলাদা কমিশন বা বোর্ড গঠন করে দিতে পারে, তাতে সাত কলেজের অধ্যক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ কয়েকজন কে রাখতে পারে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য।

৩. অথবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ সেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আছে ঠিক সেইভাবে সাত কলেজও থাকতে পারে, এতে সকল কার্যক্রম নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হবে। এমন কি পরীক্ষা নেওয়া খাতা দেখা ইত্যাদি কার্যক্রমও সাত কলেজ করবে। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র শিক্ষার মান উন্নতি কল্পে মনিটরিং করবে।

৪. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আদলেও একটা কমিশন গঠন করা যেতে পারে সাত কলেজকে নিয়ে। সেই কমিশন সাত কলেজের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

৫. যাই করি না কেন, তবে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা চেক এন্ড ব্যালেন্স করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা চাই না কোন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে ২-৩ বছর এমনি চলে যাক।

 

লেখক: যুগ্ম-আহবায়ক, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence