কিশোরী ফুটবলারকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ওয়াহিদুল আলম ফকির ফয়সাল
ওয়াহিদুল আলম ফকির ফয়সাল   © সংগৃহীত

এক কিশোরী ফুটবলারকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল মডেল থানা-পুলিশের একটি দল। গাজীপুর জেলার গাছা থানার ছয়দানা এলাকার একটি বাসা থেকে আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওয়াহিদুল আলম ফকির ফয়সাল নান্দাইল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। উপজেলা ছাত্রলীগে বর্তমানে কমিটি নেই। তবে ওয়াহিদুল এখনো অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন।

ওয়াহিদুল গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ করেন বলে নান্দাইলের শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের এই ছাত্রীর অভিযোগ। এসময় কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকেও ফয়সাল ছুরি দেখান বলে রহিম অভিযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ফয়সালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ফয়সালের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। কিশোরী কলেজে যাওয়া-আসার সময় ফয়সাল তার খোঁজখবর নিতেন।

“শুক্রবার উপবৃত্তির ফাইলে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা বলে ফয়সাল আমাকে কলেজে ডেকে নেন। কলেজে গেলে ফয়সাল আমাকে মুখ চেপে গলায় চাকু ধরে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও করে রাখেন। এতে সহযোগিতা করেন তার সহযোগী আলামিন ও অজ্ঞাত আরও একজন। মাটিতে ফেলে আলামিন আমার পা ধরে রাখে। ঘটনা কাউকে বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন ওয়াহিদুল। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আমার পরিবার।”

বাড়ি ফিরে সবাইকে বলার পর কিশোরী পুলিশে অভিযোগ দিতে যান।

কিশোরীর বক্তব্য, ওসি স্যারকে সবকিছু খুলে বলার পর তারা ‘ধর্ষণ’ মামলার বদলে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা নিয়েছে। পুলিশ আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছে। তারা এটা কেন করেছে বুঝতে পারছি না।

কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে বলেন, মেয়েটা কলেজে ঢোকার পর ফয়সাল তাকে জড়িয়ে ধরে। আমি কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ফয়সাল আমাকে চাকু দেখালে আমি বাইরে বের হয়ে অধ্যক্ষ স্যারকে ফোন করি। অধ্যক্ষ স্যার তাদের বাইরে বের করে দিতে বলেন।

কলেজের অধ্যক্ষ বাদলকুমার দত্ত পিয়নের কাছে ঘটনা শুনেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ফয়সাল মাঝেমধ্যে কলেজে আসত কোনো কাজ থাকলে। তার সঙ্গে কলেজের তেমন কারও সখ্য নেই। সে এমন কাজ করে থাকলে তার বিচার হওয়া উচিত।

পুলিশ ধর্ষণ মামলা নেয়নি কেন সে বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, কিশোরীর বক্তব্য শুনেই ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেওয়া হয়েছে।

মামলায় ফয়সাল ও অজ্ঞাত দুইজনকে আসামি করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, তাদের মধ্যে ফয়সালকে বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত হছে।

জেলার পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান বলেন, নিয়ম হচ্ছে ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী মামলা নেওয়া। যদি পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, ওই কিশোরী ফুটবলার বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে নান্দাইল উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। নির্যাতিত হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী বেশ কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা চালান।

এদিকে ওয়াহিদুলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, গাজীপুরের গাছা থানার এলাকা থেকে নান্দাইল থানা-পুলিশের একটি দল ওয়াহিদুলকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁকে নান্দাইল থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence