নাহিদকে কুপিয়েছে ইমন, অস্ত্রধারীদের নেতৃত্বে ছিলেন জসিম

নাহিদকে কোপানো ছাত্রলীগ কর্মী ইমন (উপরে) ও অস্ত্রধারীদের নেতৃত্ব দেওয়া জসিম
নাহিদকে কোপানো ছাত্রলীগ কর্মী ইমন (উপরে) ও অস্ত্রধারীদের নেতৃত্ব দেওয়া জসিম  © সংগৃহীত

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে মারা যাওয়া নাহিদ হোসেনকে কোপান ইমন নামের এক যুবক। তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী তিন নেতার অন্যতম জসীমের গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রধারী যে নয়-দশ জনের গ্রুপ ছিল, তার নেতৃত্ব দেন জসীম।

এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে দুজন জহির হাসান জুয়েল ও মো. রাব্বী। শনিবার রাতে লালমনিরহাট থেকে রাব্বীকে আটক করে র‍্যাব। আর ঢাকার নিউমার্কেট বাকি দুজনকে আটক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এ ছাড়া রবিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসের ১০১ নম্বর কক্ষ থেকে জহির হাসান জুয়েলকে আটক করে ডিবি। তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সবশেষ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তবে তাদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, সংঘর্ষের সময় ১৭ জন অস্ত্রধারী সক্রিয় ছিলেন। তাঁদের মধ্যে নয়জনের মাথায় ছিল হেলমেট। তাদের ধাওয়ায় কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ রাস্তায় পড়ে যান। সেখানে একজন এসেছে নাহিদকে কোপাতে থাকেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

আরো পড়ুন: প্রতিবাদী মা-ছেলেকে মধ্যরাতে ছেড়ে দিল পুলিশ

ভিডিও, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, হেলমেট ও ধূসর টি-শার্ট পরা যে যুবক অস্ত্র দিয়ে নাহিদকে আঘাত করেছেন তিনি ইমন। তিনি ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া হলুদ হেলমেট ও লাল রঙের গেঞ্জি পরা যে যুবক ইমনকে চড় মেরে সরিয়ে নেনে তিনি সুজন ইসলাম। তিনি ধাওয়া দিয়ে ইটের আঘাত ও লাথি মেরে আহত করেন নাহিদকে।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, দেশীয় অস্ত্র ও হেলমেট পরাদের মধ্যে আরও ছিলেন কাইয়ুম, মোনায়েম, কাওসার ওরফে সাদা কাওসার, সাদিক মির্জা, জহির হাসান জুয়েল ও রাব্বী। এর মধ্যে সাদিক ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর হাতে ছিল চাপাতি। সাদা কাওসারের হাতেও ছিল চাপাতি। আর হাতুড়ি হাতে থাকা যুবকের নাম মোনায়েম।

ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ হাসান বলেন, কলেজে ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। তারা রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন তিনি।

কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সূত্র জানায়, ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। এরপর থেকে ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপ কাজ করছে। এর নেতৃত্বে আছে জুলফিকার, ফিরোজ ও জসীম। সংঘর্ষের দিন গত মঙ্গলবার বেশি সক্রিয় ছিলেন জসীম গ্রুপের কর্মীরা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি আজিমুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দু-একদিনের মধ্যে হত্যার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। এর আগে বলার মতো কিছু নেই।’

গত সপ্তাহে নিউমার্কেট এলাকার ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা কয়েক দফায় সংঘর্ষে জড়ান। এতে নাহিদ হোসেন ও মোহাম্মদ মোরসালিন নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় চার মামলায় আসামি প্রায় ১ হাজার ৭০০। এতে নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সময় মুরসালিন হত্যার কোনো ফুটেজ পায়নি গোয়েন্দা পুলিশ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence