আপিলে ঝুলে আছে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলা

বিশ্বজিৎ দাসকে জবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটান ও কোপান
বিশ্বজিৎ দাসকে জবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটান ও কোপান  © ফাইল ফটো

বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলা সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই হত্যা মামলায় ৯ বছরে বিচারের দুটি ধাপ অতিক্রম হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল এখনো শুনানি শুরু হয়নি।

এদিকে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা রায় বাস্তবায়নের অপেক্ষায় দিন পার করছেন। সরকারের কাছে তাদের একটাই দাবি, উচ্চ আদালতের রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে এখন সীমিত পরিসরে আদালত চালু আছে। আদালত স্বাভাবিক অবস্থায় এলে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলাসহ আলোচিত মামলার শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটান ও কোপান। বাঁচার জন্য দৌড় দিলে তিনি শাঁখারীবাজারের রাস্তার মুখে পড়ে যান।

রিকশাচালক রিপন তাঁকে রিকশায় তুলে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ্বজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন। অনেক টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। তাকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।

ওই হত্যাকাণ্ডের এক বছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়। ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। চারজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও দুইজনকে খালাস দেন। এছাড়া বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আপিলকারী দুজনকে খালাস দেওয়া হয়।

২০০৬ সাল থেকে ঢাকার শাঁখারিবাজারে দর্জির কাজ করতেন বিশ্বজিৎ। দোকানের নাম ছিল নিউ আমন্ত্রণ টেইলার্স। বড় ভাইয়ের দোকান। নিহত বিশ্বজিৎ দাসের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর দাসপাড়া গ্রামে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্বজিতের এক আত্মীয় বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা সব সময় আতঙ্কের মধ্যে আছি। আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আপিল বিভাগের রায়ে আশা করি সব আসামি শাস্তি পাবে।

বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার এক আসামির আইনজীবী ছিলেন এসএম শাহজাহান। তিনি বলেন, খালাস চেয়ে আসামিদের পক্ষে আপিল হয়েছে। আদালতের নির্দেশে সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার পর শুনানির জন্য তালিকায় আসবে। তবে কবে নাগাদ শুনানি হবে, তা বলতে পারছি না। এটা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ বলেন, সুপ্রিমকোর্টে উভয় বিভাগে বিচারক সংকট এখন বড় সমস্য। একটি ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসতে সময় লাগে পাঁচ বছর। আর আপিল বিভাগে লাগছে কমপক্ষে চার বছর। যার কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে সময় লাগছে।

তিনি বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলাটি আপিল বিভাগেই হবে চূড়ান্ত বিচার। আপিল বিভাগে রায় বহাল থাকলে সত্যায়িত কপি যাবে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে। এক্ষেত্রে আসামিরা রিভিউ (পুনঃবিবেচনা) আবেদন না করলে রায় কার্যকরের জন্য বিচারিক আদালত অনুলিপি কারাগারে পাঠাবে। পরে কারা কর্তৃপক্ষ জেলকোড অনুযায়ী রায় কার্যকর করবেন। তবে আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার সুযোগ পাবেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence