মিন্নি কি নির্দোষ— যা বললেন আদালত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০১৯, ০৬:৪৪ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০১৯, ০৮:২১ PM
বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে স্থায়ী জামিনের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি রিমান্ডে থাকাবস্থায় দায়িত্বশীল পদে থেকে মিন্নি দোষ স্বীকার করেছে বলে গণমাধ্যমে পুলিশ সুপার যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা অযাচিত-অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়; ন্যায়-নীতির পরিপন্থী। যেহেতু তদন্তকাজ চলমান, সেহেতু আদালত এই মুহূর্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। তবে পুলিশ পরিদর্শককে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
হাইকোর্ট বলেছেন, ‘তদন্ত চলার সময়ে পুলিশ সুপারের (বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন) এ ধরনের বক্তব্যের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। এটা কাম্য নয়। আমরা আশা করি, দায়িত্বশীল পদে থেকে পেশাদারিত্বের পরিচয় দেবেন। আমরা এ মামলার তদন্ত চলার সময়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকছি। কিন্তু পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।’
পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ইদানীং দেখা যায়, অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে এসে গণমাধ্যমে হাজির করে সংবাদ সম্মেলন করে। অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে মামলার তদন্ত নিয়ে উৎসাহী বক্তব্য দিতে দেখা যায়। গণমাধ্যমে হাজির করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে বিচারে অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী বলা যাবে না। তদন্ত পর্যায়ে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে গণমাধ্যমে কতটুকু প্রচার করা যাবে, সে বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকা দরকার। নীতিমালা যাতে প্রণয়ন করা হয়, সে জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের আইজিকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রধান সাক্ষী ও তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে দুই শর্তে জামিন দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
গত ২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর তার ছেলেকে হত্যায় পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।
গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।পরদিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়।
তার আগের দিনই পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মিন্নি হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।’