৮ কুকুরছানা বস্তায় ভরে পানিতে ফেললেন সরকারি কর্মকর্তা, অতঃপর...

নিহত ৮টি গরু
নিহত ৮টি গরু  © টিডিসি ফটো

পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি জীবিত কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগটি অস্বীকার করে দায় চাপালেন নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

রবিবার (৩০ নভেম্বর) রাতের কোনো এক সময় কুকুরছানাগুলো পানিতে ফেলা হয়। আর সোমবার (০১ ডিসেম্বর) সকালে ছানাগুলোর মরদেহ পাওয়া যায়।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের ভেতরে ইউএনওর বাসভবনের সামনে পড়ে আছে আটটি ছানার মরদেহ। ঠিক পাশেই মাটিতে শুয়ে বারবার সন্তানের গন্ধ শুকে স্পন্দন খুঁজে ফিরছিল মা কুকুর। কোনো সাড়া না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া মা কুকুরের আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। দৃশ্যটি দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন সেখানে উপস্থিত অনেকে।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি’, পত্রিকায় গুরুত্ব পেয়েছে আরও যেসব খবর

স্থানীয়রা জানান, বহুদিন ধরেই ইউএনওর বাসভবনের এক কোণে থাকা এই কুকুরটিকে সবাই ভালোবেসে ‘টম’ নামে ডাকতেন। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা দেয়। সোমবার সকাল থেকেই পাগলের মতো ছুটোছুটি করতে দেখা যায় তাকে। ছানাগুলোর হদিস না পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে মা কুকুর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তার স্ত্রী রবিবার রাতের কোনো এক সময় জীবন্ত আটটি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। সোমবার সকালে উদ্ধার করা হয় মরদেহগুলো। পরে ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয় ছানাগুলোকে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন রনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে যে কুকুরছানা গুলোকে হত্যা করা হয়েছে এটি গণহত্যার শামিল। যে নিরীহ পশুকে হত্যা করতে পারে, সে মানুষকেও হত্যা করতে পারে। জীবিত কুকুরছনাকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবি জানান তিনি।’

অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে সব দায় স্ত্রীকে চাপান কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন। তিনি বলেন, ‘আমি এ হত্যাকাণ্ড করিনি। আমার স্ত্রী এই কাজ করেছে। আমি ঘটনার খবর জানতে পেরে স্ত্রীকে অনেক বকাবকি করেছি।’ 

এসব বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে৷’


সর্বশেষ সংবাদ