ফাইল আটকে ঘুষ: কাস্টমস কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) উত্তম কুমারের বিরুদ্ধে ‘ফাইল আটকে অর্থ নেওয়া’সহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা মেলায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। স্বামীর অবৈধ অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় স্ত্রী শিল্পী রানী সরকারের বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের অভিযোগ, উত্তম কুমার জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৯০৫ টাকা, আর তার স্ত্রী শিল্পী রানী সরকার ৭৯ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৯ টাকা অবৈধ সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকালে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বাদী হয়ে স্বামী–স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্ত বর্তমানে উত্তম কুমার বর্তমানে সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তিনি নাটোরের লালপুর থানার দেলুয়া গ্রামের গনেন্দ্র নাথ সরকারের ছেলে। তার স্ত্রীর নাম শিল্পী রানী সরকার।

দুদক জানায়, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর উত্তম কুমারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেলে তাকে স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ ও দায়–দেনার বিবরণী দিতে বলা হয়। পরে ১৯ নভেম্বর ২০২৩ তিনি মোট ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন।

যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, স্থাবর সম্পদ ১ লাখ ১০ হাজার ৭৫০ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ ৫৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭৪ টাকা সহ মোট সম্পদ পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকা।

অন্যদিকে ২০২৩–২৪ করবর্ষ পর্যন্ত তার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য মোট আয় ছিল ৮৬ লাখ ৬৫ হাজার ৮০২ টাকা, ব্যয় হয়েছে ৪৮ লাখ ৩ হাজার ১৮৩ টাকা। হিসাব অনুযায়ী তার বৈধ সঞ্চিত সম্পদ হওয়ার কথা মোট ৩৮ লাখ ৬২ হাজার ৬১৯ টাকা।

দুদকের দাবি, এই হিসাবে ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৯০৫ টাকা অবৈধ ও জ্ঞাত আয়–অসঙ্গত উৎসের সম্পদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

এদিকে দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর অবৈধ অর্থ নিজের নামে বিনিয়োগ করে ৭৯ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৯ টাকার জ্ঞাত আয়–অসঙ্গত সম্পদের মালিক হয়েছেন শিল্পী রানী সরকার।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ও ২৬(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া স্বামীর সম্পদ আড়াল ও বৈধতা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সহায়তার অভিযোগে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, তাদের দুজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। নতুন কোনো তথ্য বা অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনের আওতায় আনা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ