মুক্তিপণ আদায়ের পর শিশুকে হত্যা: আসামির ফাঁসির আদেশ আদালতের

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মো. মকবুল হোসেন
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মো. মকবুল হোসেন  © সংগৃহীত

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে দেড় বছর আগে শিশু তাওহীদ ইসলামকে অপহরণ করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরেও তাকে হত্যা করা হয়। সেই হত্যার দায়ে মো. মকবুল হোসেন নামে এক আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। 

আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে। আসামি মকবুল ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার লাখিরচর এলাকার বাসিন্দা। তিনি মৃত আলী হোসেনের ছেলে। 

অপর এক ধারায় তাকে আমৃত্যু কারাদন্ড ও ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আসামির স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার টাকা আদায় করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ ভিকটিম পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এরশাদ আলম জর্জ জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিল। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

রায় ঘোষণার পর শিশুটির স্মৃতিচারণ করে তার মা মোসা. তাসলিমা আক্তার, বোন ও নানী কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ রায়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুদন্ড কার্যকর হলেই তাদের আত্মা শান্তি পাবে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারটি।  

আরও পড়ুন : পে স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকার রসুলপুর জামিয়া ইসলামিয়া (মাদরাসা) ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে পড়াশুনা করতো ১০ বছর বয়সী শিশু মো. তাওহীদ ইসলাম। গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে পাঁচটায় মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বের হয়ে মামার দোকানে যায়। মামাকে না পেয়ে একাই বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয় শিশুটি। পথিমধ্যে আসামি মো. মকবুল হোসেন তাকে অপহরণ করে  এবং পরিবারের নিকট মুক্তিপণ দাবি করে। পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় আসামির পছন্দ মতো জায়গায় মুক্তিপণ রেখে আসেন ভুক্তভোগীর মামা। টাকা পেয়েও আসামি মকবুল শিশুটিকে ফেরত দেয়নি। পরে পরিবারটি র‍্যাবের কাছে অভিযোগ দিলে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেফতার করে। পরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি ভবনের সেফটিক ট্যাংকি থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। 

এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. তাসলিমা আক্তার বেগম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক এ কে এম সাইদুজ্জামান গত বছরের ৩১ জুলাই মকবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩০২/২০১ ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে আসামির বিরুদ্ধে ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। 


সর্বশেষ সংবাদ