দিনে দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে গুলি করে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যা, যা দেখা গেল সিসি ক্যামেরায়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৫ PM , আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৭ PM
পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে দিনে দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে দুই দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুন (৫৫) নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার পর দুই দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করে। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক ফারুক হোসেন জানান।
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ২০ বছরের বেশি সময় জেল খেটে ২০২৩ সালে জামিনে মুক্তি পান মামুন। তিন মাসের মাথায় তেজগাঁও বিজি প্রেস এলাকায় তাকে হত্যার চেষ্টা হয়। সে সময় রাস্তার ওপর মামুনের গাড়ি আটকে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হলে ভুবন চন্দ্র শীল নামে এক আইনজীবী গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
হামলার লক্ষ্যে থাকা মামুনকে খুন করতে না পারলেও সে সময় চাপাতি দিয়ে কোপায় হামলাকারীরা। মামুন সে সময় পুলিশকে বলেছিলেন, তেজগাঁওয়ের ওই হামলার পেছনে পুলিশের আরেক তালিকাভুক্ত ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সানজিদুল ইসলাম ইমনের হাত রয়েছে ।
আজকের আদালত পাড়ার ঘটনার পর ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা যায়, ফুলহাতা টিশার্ট পরিহিত মামুন দৌড়ে এসে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ফটকের সামনে দিয়ে প্রবেশ করেন এবং মাস্কে মুখ ঢাকা এবং ক্যাপ পরা দুই যুবক পেছন পেছন এসে পিস্তল দিয়ে গুলি করে চলে যায়।
সেখানে দায়িত্বরত একজন নিরাপত্তারক্ষী বলেন, হত্যার শিকার ওই ব্যক্তিকে বেলা ১০টা ৫১ মিনিটের দিকে হাসপাতালের ফটক দিয়ে বের হন। প্রধান ফটক পার হয়ে একটু সামনে এগোনোর পর রাস্তা থেকে তার দিকে গুলি করে হামলাকারী দুইজন। এরপর তিনি দৌড়ে আবার হাসপাতালের ফটকের ভেতরে ঢুকে পড়েন।
তখন মাস্ক পরিহিত দুই হামলাকারী সিনেমার কায়দায় হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করতে করতে হাসপাতালে প্রধান ফটক থেকে একটু ভেতরে ঢুকে পড়ে। পরে তারা কবি নজরুল কলেজের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, মামুনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। তার জন্ম ১৯৭০ সালে। পুলিশ জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন একসময় হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তারা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি।
রাজধানীর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াসিন বলেন, গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে যান। গিয়ে দেখেন, এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।