‘বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনা তদন্তে আসছে ৪ দেশের বিশেষজ্ঞ টিম’

ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  © টিডিসি ফটো

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ৪টি দেশের বিশেষজ্ঞ টিম আনা হচ্ছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) পৌনে ১২টায় বিমানবন্দরে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে এমনটা জানান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, কার্গো ভিলেজ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে চারটি দেশের বিশেষজ্ঞ টিম আনা হচ্ছে। ইংল্যান্ড, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া ও চীন থেকে বিশেষজ্ঞরা আসছেন। তারা তদন্ত করে আগুন লাগার কারণটা কী, এর সঙ্গে কে দায়ী এটা বের করতে পারবেন। এছাড়া তারা এসে তদন্ত করে দেখবেন এখানে কোনো অব্যবস্থাপনা ছিল কিনা। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। ফায়ার সার্ভিস ফেল করেনি। তারা সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে কাজ করেছে। এয়ারপোর্ট অথরিটির চারটি ইউনিট চার মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ফায়ার ব্রিগেডের ইউনিটগুলোও ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আসে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কারণ ওই জায়গায় খাদ্যপণ্য বেশি ছিল, কেমিক্যাল নয়।

তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দরে ইলেকট্রনিক গেট স্থাপন দ্রুত চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত ভোগান্তি কমাতে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

বিমানবন্দরের ফায়ার ইউনিটের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যে ফায়ার ইউনিট বিমান পরিচালনার জন্য থাকে, সেটি কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে—এতে কোনো সমস্যা নেই। যেমন আমরা বাসায় যে পোশাক পরি, তা প্রয়োজনে পরে আত্মীয়ের বাড়িতেও যাওয়া যায়।

বিমানবন্দরে ভয়াবহ এ আগুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে একাধিক সংস্থা। এখন পর্যন্ত তিনটি পৃথক তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি আগুন লাগার কারণ তারা খতিয়ে দেখবে।  প্রায় সাড়ে ২৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে আমদানি কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন নেভাতে। কেন আগুন নেভাতে এত সময় লাগল– এর পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। সেগুলো হলো– উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য বস্তুর আধিক্য, স্টিল স্ট্রাকচারের তাপ শোষণ, অপরিষ্কার ও গাদাগাদি পরিবেশ, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি এবং ছোট ছোট স্টিলের স্ট্রাকচার কেটে ভেতরে প্রবেশ করায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
এ সময় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং বিজিবির সাড়ে সাত ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। গত কয়েকদিন ধরে স্বল্প পরিসরে আমদানি পণ্য খালাসের কাজ চলছে। অগ্নিকাণ্ডে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)।


সর্বশেষ সংবাদ