কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে নবীনবরণে সংঘর্ষ: অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১৭

১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ
১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ  © সংগৃহীত

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মূলহোতা সিফাত ও আবরারসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও র‌্যাব। রবিবার (১৯ অক্টোবর) ও সোমবার (২০ অক্টোবর) কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা এবং বুড়িচং উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে দেশীয় অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রবিবার দুপুরে কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন পাঁচজন। পরে তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহতরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান, অনয় দেবনাথ, মো. মাহিন ও মো. রিজভী—যারা কুমিল্লার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী।

ঘটনার সূত্রপাত হয় রোববার সকালে, যখন কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী জিসান ও তাহফিদের সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীন সিফাতের কথা কাটাকাটি হয়। ওই সময় সিফাত ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করে এবং জিসানকে মারধরের হুমকি দেয়।

পরে ফাহাদ ও সিফাতের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সিফাত তার বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়া বন্ধুদের ফোন করে ডেকে আনে। দুপুর ১২টার দিকে ক্লাস শেষ হওয়ার পরপরই সিফাত ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়।

ঘটনার একটি ১২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায়, এক তরুণ হাতে ধারালো রামদা নিয়ে অন্যদের ধাওয়া করছে। ভিডিওতে আরেক তরুণের হাতে পিস্তলও দেখা যায়, যদিও তার মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। ভিডিওতে যে তরুণকে হাতে অস্ত্রসহ দেখা গেছে, তাকে সিফাত বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, ‘এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আহতদের কেউ আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী নয়, তবে কয়েকজন ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র এই ঘটনায় জড়িত বলে জানা গেছে। আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরও জানানো হচ্ছে।’

কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের পর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র রয়েছে। ঘটনার পরপরই আমরা ডিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে যৌথ অভিযান শুরু করি। রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও বুড়িচং উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মূলহোতাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিবি ও কোতোয়ালি থানা যৌথভাবে ১৫ জন এবং র‌্যাব ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ