সোনালী ব্যাংকের ভুলে একাউন্টে ৩ কোটি টাকা, অতঃপর...
- ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫৬ PM
সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তার ভুলে তিন কোটি টাকা জমা পড়ে এক সাধারণ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে। পরবর্তীতে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার পরও মামলা, গ্রেপ্তার, কারাভোগ ও চাকরি হারাতে হয়েছেন গাইবান্ধার আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি। ব্যাংকের এই ভুলের কারণে তাকে সাত মাস কারাভোগ করতে হয়েছে এবং হারাতে হয়েছে নিজের চাকরিও।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।
আবু তাহেরের বর্ণনায় জানা যায়, তিনি আল-আমীর ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আমিনুল হক তার নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি একাউন্ট খোলেন। ২০২২ সালের ৬ জুলাই সোনালী ব্যাংকের গাইবান্ধা শাখার একটি ডিজিটাল ভুলের কারণে ওই একাউন্টে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা জমা হয়।
টাকার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের মালিককে জানানো হলে তিনি টাকা তার এক বন্ধু পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন এবং তাহেরকে টাকা অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেন। মালিকের আচরণে সন্দিহান হয়ে আবু তাহের ৮৫ লাখ টাকা সরিয়ে নেন। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করলে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট তাহেরকে নোয়াখালী থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জেলে থাকাকালে তিনি জানতে পারেন, টাকা আমিনুল হকের বন্ধুর পাঠানো নয়, বরং ব্যাংকের নিজস্ব ভুলেই টাকা তার একাউন্টে জমা হয়েছে। এদিকে মালিক আমিনুল হক দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
আবু তাহেরের পরিবার তার জেলে থাকা অবস্থায় ব্যাংকে মোট ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা দেন, যা ব্যাংকের দাবিকৃত অর্থের চেয়ে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি জামিনে মুক্তি পান।
তাহেরের অভিযোগ, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সমুদয় টাকা বুঝে নিলেও মামলা প্রত্যাহার করছে না এবং বাড়তি টাকা ফেরত দিচ্ছে না। তার একাউন্টও সচল করা হয়নি। তিনি বলেন, ব্যাংকের ভুলের কারণে তাকে জেল, জরিমানা ও জুলুমের শিকার হয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, যা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার বর্তমান ম্যানেজার ফজলে এলাহী বলেন, তিনি নতুন দায়িত্বে রয়েছেন এবং বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তার দাবি, ব্যাংক এখনও পুরো টাকা পায়নি এবং অভিযুক্তের কাছ থেকে আরও ২০ লাখ টাকা পাবে।