ডাকসুর নারী প্রতিনিধিদের ‘হাউস স্লেভস’ বলা সেই ব্র্যাক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

অভিযুক্ত ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষণা সহযোগী মো. রাকিবুল মোবিন
অভিযুক্ত ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষণা সহযোগী মো. রাকিবুল মোবিন  © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিজয়ী নারী প্রতিনিধিদের হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করেছেন মো. রাকিবুল মোবিন নামে এক ঢাবি শিক্ষার্থী এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) গবেষণা সহযোগী। সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই নারী প্রতিনিধিদের ছবি সংবলিত একটি পোস্ট শেয়ার দিয়ে তাদেরকে ‘হাউস স্লেভস বা গৃহদাসী’ বলে অবমাননাকর মন্তব্য করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের এই শিক্ষার্থীর এমন কটূক্তির ঘটনায় ডাকসুর নবনির্বাচিত মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক শাখাওয়াত জাকারিয়া ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইমরান মাতিন বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। 

শাখাওয়াত জাকারিয়ার দেওয়া অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, সম্প্রতি মো. মোবিন ডাকসুর নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিদের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে এক ধরনের স্পষ্টভাবে নারী বিদ্বেষী ও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তার এই মন্তব্য নারীদের নেতৃত্বকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। যা কেবল আক্রমণাত্মক নয়, বরং নারীর মর্যাদা, ক্ষমতায়ন ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ওপর সরাসরি আঘাত।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এ ধরনের আচরণ লিঙ্গ সমতা, গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব এবং মানবিক মর্যাদার প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিআইজিডি প্রকাশ্যে ধারণ করার দাবি করে, তার সঙ্গে সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ। একটি খ্যাতনামা একাডেমিক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী যখন প্রকাশ্যে নারীবিদ্বেষ ছড়িয়ে দেন, তখন তা প্রতিষ্ঠানটির নৈতিক মানদণ্ড, পেশাগত জবাবদিহিতা এবং নারীর অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতির ওপর গভীর প্রশ্ন তোলে।

মোবিনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এটি নিছক একটি ব্যক্তিগত মন্তব্য নয়। এটি যেমন লিঙ্গ-ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, তেমনি বিআইজিডি’র প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্ন। এই প্রেক্ষাপটে দৃঢ় ও স্বচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া অন্য কিছু করা হলে তা প্রতিষ্ঠানটির নীরব সহযোগিতা হিসেবে বিবেচিত হবে, যা এ ধরনের পশ্চাদপদ ও ক্ষতিকর আচরণকে স্বাভাবিক করার শামিল। তাই বিষয়টি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী ডাকসুর মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক শাখাওয়াত জাকারিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ডাকসুতে বিজয়ী নারী শিক্ষার্থীদের ‘হাউস স্লেভস বা গৃহদাসী’ বলে কটাক্ষ করে পোস্ট করেছে ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের ১৯-২০ সেশনের ছাত্র রাকিবুল মোবিন। তিনি বর্তমানে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে গবেষক হিসেবে কর্মরত। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি নির্বাহী পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি।


সর্বশেষ সংবাদ