বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া করে ক্যামেরা ছিনতাই, ফটোগ্রাফার খুন: গ্রেপ্তার ১০
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ০১:৪৪ PM , আপডেট: ২৩ মে ২০২৫, ১১:৩৩ AM
রাজধানীর হাজারীবাগের জাফরাবাদে ফটোগ্রাফার নূরুল ইসলামকে হত্যার পর দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুয়া বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা বলে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে হাজারীবাগ থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাজধানী ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে এই ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা, একটি চাপাতি, একটি রামদা ও একটি বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২১ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের ডিসি মো. মাসুদ আলম এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডিতে শিক্ষার্থী আলভি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৪
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত নূরুল ইসলাম (২৬) ‘Nurislam Photographer’ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালিয়ে পেশাদার ফটোগ্রাফি করতেন। ১৫ মে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে তার মোবাইলে ফোন করে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার অনুরোধ জানানো হয়। প্রাথমিকভাবে অগ্রিম ৫০০ টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। পরদিন ১৬ মে সন্ধ্যায় সেই নম্বর থেকেই তাকে শংকর চৌরাস্তায় অপেক্ষা করতে বলা হয়। নূরুল ইসলাম তার সহকারী ইমনকে নিয়ে মতিঝিলের বাসা থেকে বের হন। শংকর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তাদের একজন দেখা করেন এবং বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একটি অটোরিকশায় করে রওনা দেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, রাত ৮টার দিকে জাফরাবাদ পুলপারের ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছামাত্র ওঁৎ পেতে থাকা ১০ যুবক অটোরিকশার গতিরোধ করে। আচমকা হামলায় ইমন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও নূরুল ইসলামকে তারা ধরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, ঘাড়, বাহু ও আঙুলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এরপর তাঁর কাছে থাকা দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। নূরুলের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে এক রাতে শিক্ষার্থীসহ দুই খুন, নেপথ্যে কী?
স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নূরুল ইসলামের বড় ভাই মো. ওসমান গনি থানায় হত্যা মামলা করেন।
হাজারীবাগ থানার ওসি জানান, মামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। এরপর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ঢাকার রায়েরবাজার, শংকর ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এবং তারাকান্দা থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তারা নিয়মিত টিকটকে ভিডিও তৈরি করত এবং আকর্ষণীয় ছবি ও ভিডিও তৈরি করতে উন্নতমানের ক্যামেরা সংগ্রহের পরিকল্পনা করে। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রায়েরবাজারে ফুটবল খেলার সময় ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর নাঈম আহমেদের নেতৃত্বে ইভেন্ট ফটোগ্রাফারদের টার্গেট করে ‘বিয়ের অনুষ্ঠান’ দেখিয়ে ফাঁদ পাতা হয়।