বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিট
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৫ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫১ PM
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও বরখাস্ত করতে রিট করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার) আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের ৬ জন আইনজীবীর পক্ষে রিটটি করেন।
রিটে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেবিচকের চেয়ারম্যান, পরিচালক (প্রশাসন) ও প্রধান প্রকৌশলীকে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৬ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আজ রিট করা হয়।
রিটকারীরা হলেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার), ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি) , অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার, অ্যাডভোকেট মো. শাহেদ সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট খায়রুল বাশার।
আরও পড়ুন: বিচারপতি মানিকের করুণ পরিণতি দেখে পুরনো গানটি আবার শুনলাম— পুলিশ কর্মকর্তার পুরনো স্ট্যাটাস ভাইরাল
নোটিশে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানকে তৎক্ষণাৎ তার পদ থেকে সরাতে বলা হয়েছিল। নোটিশে এক দিনের মধ্যে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীকে তার পদ থেকে সরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়েরসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
নোটিশে বলা হয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের বিমানবন্দরগুলোয় শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের অনুসন্ধানে এই লুটপাটের সঙ্গে প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে। এ ঘটনায় হাবিবুর রহমানসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করা হয়েছে। প্রধান প্রকৌশলীর মতো পদে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই তদন্ত কাজ ব্যাহত হবে। তিনি সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত ধ্বংস করতে পারেন বা সরিয়ে ফেলতে পারেন। তাই তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়াটা জরুরি। তিনি পদে থাকলে স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকাটা স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: জাবিতে শিক্ষার্থীর চুরি হওয়া স্মার্টফোনসহ নারী আটক
নোটিশে আরও বলা হয়, প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকে অনিয়ম-দুর্নীতির আরও একাধিক অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশের সব বিমান ও স্থলবন্দরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে তার বিরুদ্ধে জিডি দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী। তারপরও আজ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, বেবিচকের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলায় ইতোমধ্যে আসামি হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিমান সচিব মহিবুল হক, যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক ও বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) আওতাধীন দেশের বিমানবন্দরগুলোর উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। ইতোমধ্যে থার্ড টার্মিনালসহ দেশের ৮ বিমানবন্দরে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৯০০ কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে ‘হাড়ের’ আলামত সংগ্রহ সিআইডির
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ সোলায়মান (তুষার) বলেন, বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগে অন্ত নেই। তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক দুর্নীতির মামলা হয়েছে। তিনি তার পদে বহাল থাকলে মামলার তদন্ত কাজ প্রভাবিত করতে পারেন। ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে তার পদ থেকে সরানোটা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে তার বিরুদ্ধে জিডি করা হয়েছে। তিনি পদে থাকলে সঠিকভাবে তদন্ত হবে না এমনটা দুদকও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। নোটিশ দেওয়ার পরও ব্যবহা না নেওয়ায় রিট করা হয়েছে।