প্রাথমিকের পরীক্ষায় জালিয়াতি, শতাধিক মোবাইল-ডিভাইসসহ আটক ৫৪

রংপুর ও গাইবান্ধা জেলা

  © সংগৃহীত

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুর ও গাইবান্ধার বিভিন্ন কেন্দ্র ও এলাকা জায়গা থেকে মোট ৫৪ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের কাছ থেকে বেশকিছু মোবাইল ফোন ও ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পরীক্ষার আগে ও পরীক্ষাচলাকালী সময়ে এবং এর আগে তাদেরকে আটক করা হয়।

জানা যায়, সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা (এমসিকিউ টাইপ) চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। প্রথম ধাপে রংপুর, সিলেট, বরিশাল বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে পরীক্ষার হলে বসেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রথম ধাপের পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন চাকরিপ্রার্থী।

এই নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে গাইবান্ধা সদরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতির সময় চক্রের পাঁচ মূলহোতা ও ৩০ পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৩)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ২২টি ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত মাস্টারকার্ড, ১৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস ও ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান জানান, প্রথম ধাপের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতির সময় চক্রের পাঁচ হোতা ও ৩০ পরীক্ষার্থীসহ মোট ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, এই নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ও এলাকা থেকে ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু মোবাইল ফোন ও ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিটু এক্স ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানের চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রস্তুতির প্রাক্কালে পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ তিনটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ পরীক্ষার্থী এবং ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্যরা আছেন।

আটকদের মধ্যে ১১জন পরীক্ষার্থী, এদের মধ্যে আটজন নারী। বাকিরা কলেজশিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত। আটক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, একটি অসাধু চক্র ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে এই জালিয়াতি কাজের সঙ্গে জড়িত। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকে পরীক্ষার আগের রাতে, সকালে ও পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের আটকের ফলে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি চক্রটি। এই ঘটনায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি নিশ্চিত করেন।


সর্বশেষ সংবাদ