কলেজ পাঠাগারের এক মিনি ট্রাক বই চুরি, বিক্রি কেজিতে

বিরামপুর সরকারি কলেজ
বিরামপুর সরকারি কলেজ  © ইন্টারনেট

দিনাজপুরের বিরামপুর সরকারি কলেজের পাঠাগার থেকে এক মিনি ট্রাক ভর্তির সমান প্রায় তিন হাজার বই চুরি হয়ে গেছে। কলেজের অফিস সহায়ক শহিদুল ইসলাম এসব বই চুরি করে ভাঙারির দোকানে কেজি দরে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার বই চুরির বিষয়টি জানতে পারে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রভাষক শফিকুল ইসলাম এবং ক্রীড়া শিক্ষক ও লাইব্রেরির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রবিউল ইসলাম বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাঁরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অদ্বৈত্য কুমারকে জানান। তিনি কয়েকজন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে পাঠাগারে যান। গিয়ে দেখেন, বইয়ের তাকগুলো প্রায় ফাঁকা।

পাঠাগারের বই দেওয়া-নেওয়া করেন অফিস সহায়ক শহিদুল ইসলাম। চাবিও তার কাছে থাকে। অধ্যক্ষ তাকে জিজ্ঞাসা করেন। একপর্যায়ে শহিদুল বই চুরির কথা স্বীকার করেন। বইগুলো তিনি বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। এ সময় তিনি দু’দিনের মধ্যে বই ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।

জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ১৯৭২ সালে ডিগ্রি পাস এবং ১৯৮৫ সালে পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কোর্স চালু হয়। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। ২০১৮ সালে জাতীয়করণ হয়। কলেজটি অনেক পুরোনো হওয়ায় পাঠাগারে দুষ্প্রাপ্য বই ছিল।

এদিন সন্ধ্যায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিষয়টি পরিচালনা কমিটির প্রধান ও ইউএনও নুজহাত তাসনীমকে জানান। সন্ধ্যায় ইউএনও তার কার্যালয়ে শিক্ষক ও শহিদুলকে ডাকেন। সেখানেও বই চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন। এ সময় সিদ্ধান্ত হয়, শহিদুল ১০ দিনের মধ্যে বই ফেরত দেবেন অথবা ক্ষতিপূরণ ২ লাখ টাকা জমা দেবেন কলেজ তহবিলে।

কলেজ বাজারের ভাঙারি দোকানদার মিন্টু মিয়া বলেন, তিন-চার মাস আগে শহিদুল এক ব্যাগ পুরোনো বই বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি তিনি ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে কিনেছেন। বইগুলো পাঠাগারের জানলে কিনতেন না বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন: প্রতি শ্রেণি শাখায় ৫৫ জনের বেশি ভর্তি করা যাবে না

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলামের বক্তব্য জানা যায়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান ও ক্রীড়া শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, এক বছর ধরে পাঠাগারের বই শিক্ষার্থীদের বাড়িতে নেওয়া নিষেধ আছে। বৃহস্পতিবার পাঠাগারে ঢুকে তাকগুলো ফাঁকা পান। সেখানে সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, বিজ্ঞান ও কলেজের বিভিন্ন শ্রেণির পাঁচ হাজারের বেশি বই ছিল। তিন হাজারের বেশি বই চুরি হয়েছে।

বিরামপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অদ্বৈত্য কুমার বলেন, শহিদুল চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আনুমানিক এক মিনি ট্রাক বই চুরি হয়েছে। দুর্গাপূজার ছুটিতে কলেজ বন্ধ আছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে শহিদুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো হবে। এ ছাড়া চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইউএনও নুজহাত তাসনীম বলেন, কলেজের বই চুরির বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence