শিশু আয়াতের মাথা উদ্ধার করেছে পিবিআই

আলিনা ইসলাম আয়াত
আলিনা ইসলাম আয়াত  © ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে খুন হওয়া পাঁচ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতের মৃতদেহের খণ্ডিত অংশগুলোর মধ্যে তার দুটি পায়ের পর এবার তার খন্ডিত মাথাও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার (৩০ নভেম্বর) নগরীর নগরের বন্দরটিলার আকমল আলী ঘাটসংলগ্ন স্লুইসগেটের খাল থেকে তার পা উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই স্থান থেকে আজ শিশু আয়াতের খন্ডিত মাথা উদ্ধার করে তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান জানিয়েছেন, বুধবার যে স্থানে আয়াতের খণ্ডিত পা দুটি পাওয়া গিয়েছিল, তার কাছাকাছি স্থানেই প্যাকেটে মোড়ানো মাথাটি পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত আবীর যে স্থানে মৃতদেহের খণ্ডিত অংশ ফেলেছিল বলে জানিয়েছিল তার থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে এ খণ্ডিত অংশ পাওয়া যায়। কয়েকদিনের তল্লাশির পর স্লুইস গেইটের শেষ প্রান্তে টেপ মোড়ানো দুটি প্যাকেট পাওয়া যায় টেপ মোড়ানো অবস্থায়, তাতে পা গুলো ছিল বলেও জানান তিনি। এতে সহায়তা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

পিবিআই বলছে, জিজ্ঞাসাবাদে আবীর তাদের বলেছিল, সে আয়াতের মৃতদেহ ছয় টুকরো করে ছয়টি প্যাকেটে করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলেছিল। তার মধ্যে আয়াতের দুই হাত ও বাকি অংশ সাগরে এবং মাথা ও দুই পা আকমল আলী রোড স্লুইস গেইটের কাছে নর্দমায় ফেলে বলে জানায় ঘাতক আবীর।

তারা আরও বলছে, পিবিআই পাঁচ দিন ধরে তল্লাশি চালাচ্ছে। লাশের বাকি অংশগুলো খুঁজে পেতে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।

অন্যদিকে আয়াতের বাবা সোহেল রানা পিবিআইকে অনুরোধ করে বলেন, তারা এত দিন ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাছে অনুরোধ উদ্ধারকাজ যেন আরও চালিয়ে যাওয়া হয়। আমি আমার মেয়ের সুন্দর মুখটি দেখতে চাই। তিনি আরও জানান, আবিরের মা-বাবা সবকিছু জানতেন। তাঁরা তা গোপন রেখেছেন। রিমান্ডে আবিরসহ তাঁর পরিবারকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুন: বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করলেন উপজেলা আ’লীগ সা.সম্পাদক প্রধান শিক্ষক

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক মনোজ দে জানিয়েছেন, আসামি আবিরের বাবা আজহারুল ইসলাম ও মা আলো বেগমকে তিন দিনের রিমান্ড এবং আবিরকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে জানয়ে তিনি বলেন, আবিরই তাদরে জানিয়েছে লাশ ছয় টুকরা করার বিষয়টি।

এরআগে পিবিআই গত ২৫ নভেম্বর আবিরকে নগরীর ইপিজেড এলাকা থেকে আটক করে। একই দিন তাকে নিয়ে উদ্ধার অভিযানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি এবং আয়াতের জুতা উদ্ধার করে পিবিআই।

গত ১৫ নভেম্বর মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা থেকে আয়াতকে প্রথমে অপহরণ ও পরে হত্যা করে আবীর। তার পরিকল্পনা ছিল আয়াতকে অপহরণ করে ছয়-সাত লাখ টাকা আদয় করবে। কিন্তু তার মুঠোফোনের সিম (কুড়য়ে পাওয়া সিম) কাজ না করায় শিশুটির পরিবারকে ফোন দিতে পারেননি সে। এসময় শিশুটি চিৎকার করতে চাইলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে ধরা পড়ার ভয়ে শিশুটিকে কেটে ছয় টুকরা করে কিছু অংশ সাগরে ভাসিয়ে দেন ঘাতক আবীর। আর বাকী অংশ পার্শ্ববর্তী আকমল আলী ঘাটসংলগ্ন স্লুইসগেটের পাশে ফেলে হয়। মূলত, ভারতীয় টিভি সিরিজ ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে আবির এ কাজ করার কথা পিবিআইয়ের কাছে স্বীকার করে সে।

আয়াত ইপিজেড থানার নয়ারহাট ওয়াছমুন্সী বাড়ি এলাকার সোহেল রানার মেয়ে। তাদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ভাড়া থাকে আবীরের পরিবার। আবীরের বাবা ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম আয়াতদের বাসায় ভাড়া থাকেন। তাঁর মা আলো বেগম পোশাক কারখানার শ্রমিক। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ায় তিনি ইপিজেড এলাকার আকমল আলী রোড এলাকায় অন্য বাসায় থাকেন। মা ও বাবার দুটি বাসায় যাতায়াত ছিল আবিরের।

গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা ওয়াজ মুন্সিবাড়ি এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আলিনা বাসার পাশে একটি মক্তবে পড়তে যাওয়ার সময় তাকে অপহরণ করেন আবীর। আয়াতের বাবা স্থানীয় একটি মুদিদোকানের মালিক।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence