বড় পরাজয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
- স্পোর্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৩ PM , আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৩ PM
জিততে হলে দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হতো বাংলাদেশকে। তবে সেই ম্যাচে স্বাগতিকরা লড়াই পর্যন্ত করতে পারেনি। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি তামিম, ইমন, সাইফ ও লিটনরা। ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে একমাত্র রানের দেখা পেয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। ডানহাতি এই ব্যাটার ৫০ বল খেলে অপরাজিত ৮৩ রান করেন, তবু প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয় আসেনি বাংলাদেশের।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) চট্টগ্রামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় আয়ারল্যান্ড। জবাবে ১৪২ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল আইরিশরা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের পঞ্চম বলেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। বাঁ-হাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিসের বলে মিড-অনে হ্যারি টেক্টরের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান।
দ্বিতীয় ওভারে আউট অধিনায়ক লিটনও। মাত্র ৩ বলে ১ রান করার পর দলকে ৪ রানে রেখে ফেরেন তিনি। অ্যাডাইরের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে নেওয়া লিটনের শটটি ধরে ফেলেন টিম টেক্টর।
সতীর্থ তামিম ও অধিনায়ক লিটনের পথেই হাঁটেন পারভেজ ইমন। অ্যাডারের করা চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলে তুলে মারার চেষ্টা করতে গিয়ে জর্জ ডকরেলের ক্যাচে আউট হন তিনি। ৬ বল খেলে ১ রান করা এই ব্যাটারের বিদায়ে মাত্র ৫ রানে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
ইনফর্ম সাইফও আজ ব্যর্থ হন। ম্যাকার্থির বলে লাইন মিস করে বোল্ড হন ডানহাতি এই ব্যাটার। ১৩ বলে ৬ রান করেন সাইফ।
পরে হৃদয়-জাকেরের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল টাইগাররা। তবে ইনিংসের দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জাকের। ১৬ বলে ২০ রান করে ফেরার আগে পঞ্চম উইকেটে হৃদয়কে নিয়ে ৪৮ রান যোগ করেন তিনি।
এরপরে হামফ্রিসের করা ত্রয়োদশ ওভারের প্রথম বলে হ্যারি টেক্টরের হাতে ক্যাচ দেন তানজিম হাসান (৬ বলে ৫ রান)। পরে উইকেটে এসে তিন বল মোকাবিলায় রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন রিশাদও। পরের বলেই নাসুম আহমেদকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন বাঁহাতি স্পিনার হামফ্রিস।
সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে একাই লড়াই জিইয়ে রেখেছিলেন হৃদয়। তবে এই ব্যাটারের ৫০ বলে অপরাজিত ৮৩ রান কেবলই ব্যবধান কমায়। শেষমেশ ৯ উইকেটে ১৪২ রান তুলে থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে চারটি উইকেট নেন হামফ্রিস। এ ছাড়া ম্যাকার্থি তিনটি ও অ্যাডায়ার দুটি উইকেট নেন।
এর আগে, টস জিতে শুরুতেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। তবে পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে সেই ঝড় থামান তানজিম সাকিব। প্যাভিলিয়নে ফেরান পল স্টার্লিংকে। টাইমিং ভুল করে স্টার্লিং বলটি আকাশে তুললে সেটি নিরাপদে হাতে জমা নেন সাইফ। ১৮ বলে ২১ করে ফেরেন স্টার্লিং।
পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারালেও ৪৮ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। তবে প্রথম ধাক্কার পর দলের হাল ধরেন দুই ভাই হ্যারি টেক্টর ও টিম টেক্টর। শুরুতে বেশ দেখেশুনেই খেলেন তারা এবং ৬ দশমিক ২ ওভারে দলের অর্ধশতক রানও ছুঁয়ে ফেলেন। তবে এই জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে রিশাদের বলে তামিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন টিম টেক্টর (১৯ বলে ৩২)।
জোড়া উইকেট হারালেও ঝোড়ো ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন সফরকারী ব্যাটাররা। অভিজ্ঞ হ্যারি টেক্টরকে চমৎকার সঙ্গ দেন লরকান টাকার। এই জুটিতেই ১২ ওভারে দলীয় স্কোর তিন অঙ্কে পৌঁছে যায় আইরিশদের। তবে বেশি দূর যেতে পারেননি টাকার, শরিফুলের বলে ইমনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ১৮ রান করেই থামে তার ইনিংস।
এরপর আয়ারল্যান্ডের রান তোলার দায়িত্ব নিয়ে এগোচ্ছিলেন হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফার। তবে তানজিম ভাঙেন সেই জুটি। ক্যাম্ফারের ড্রাইভ থেকে ইমন নেন চমৎকার এক ক্যাচ।
ইনিংসের শেষপর্যায়ে টেক্টরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জর্জ ডকরেল। শেষের দিকে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে ১৮০ রানের পার পৌঁছে দেন টেক্টর। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে তানজিম হাসান সাকিব ২ উইকেট নেন। একে একটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম এবং রিশাদ হোসেন।