আরেকটি স্বস্তির দিন বাংলাদেশের
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৯ PM , আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৯ PM
মুশফিকুর রহিমকে ঘিরেই সকালটা শুরু হয়েছিল। তবে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ইতিহাস লিখতে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখেননি মুশি। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই তিন অঙ্কে পৌঁছে যান এই ব্যাটার। পরে লিটনও স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। তাদের ম্যাজিকে ব্যাটিংয়ে দাপট দেখানোর পর বল হাতেও আধিপত্য দেখায় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় দিনের শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান। এখনো বাংলাদেশ থেকে ৩৭৮ রানে পিছিয়ে আইরিশরা। এতে প্রথম টেস্টের মতো আবারও ফলোঅন শঙ্কায় আয়ারল্যান্ড।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৪৭৬ রানের জবাবে ভালো শুরুই পেয়েছিল আইরিশরা। তবে সফরকারীদের দলীয় পঞ্চাশ পেরোনোর আগেই আঘাত হানেন খালেদ আহমেদ। ডানহাতি এই পেসারের নিখুঁত লেংথে লেগ সাইডে ফ্লিক করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েন পল স্টার্লিং। অবশ্য আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে রিভিউ নিয়েও কাজে আসেনি। ২৬ বলে ২৭ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন আইরিশ ওপেনার।
এরপর নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন হাসান মুরাদ। তার তৃতীয় বলে প্রথম স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন অ্যান্ডি বালবির্নি। ফেরার আগে ৬০ বলে ২১ রান করেন আইরিশ অধিনায়ক।
শেষ বিকেলে আরও চাপ বাড়ায় স্বাগতিকরা। ৭ বলের ব্যবধানে ফেরেন দুই আইরিশ ব্যাটার। খালেদ ও মুরাদের পর ব্রেকথ্রু এনে দেন মিরাজ। ২৬তম ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন কারমাইকেলকে। ১৭ রান করা এই ব্যাটার অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন। তবে লাভ হয়নি, শেষ পর্যন্ত সাজঘরের পথ ধরতেই হয় তাকে। পরে আবারও আঘাত হানেন মুরাদ। তার দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ক্যাম্ফারকে শূন্য রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন।
দিনের একদম অন্তিম মুহূর্তে টেক্টরকে ফিরিয়ে পঞ্চম উইকেট এনে দেন তাইজুল। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি (৩৪ বলে ১৪)। মূলত আম্পায়ার্স কলের কারণেই সিদ্ধান্তটা স্বাগতিকদের পক্ষে আসে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) হোম অব ক্রিকেটে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ইতিহাস গড়েন মুশফিক। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে নাম লিখিয়ে সেই ম্যাচেই তুলে নেন মহামূল্যবান এক সেঞ্চুরি। টেস্ট ইতিহাসে মাত্র ১১তম ব্যাটার হিসেবে শততম ম্যাচে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ে নিজের নাম তোলেন এলিট তালিকায়। ২১৩ বল মোকাবিলা করে ১০৬ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। পরে টাইগারদের রানের চাকাকে আরও গতিশীল করেন লিটন। এগিয়ে যেতে থাকেন তিন অঙ্কের দিকে। অবশেষে ১৫৮তম বলে পৌঁছান কাঙ্ক্ষিত সেই সেঞ্চুরিতে।
লিটন আর মিরাজের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪০০ রানের মাইলফলক ছাড়ায় বাংলাদেশ। তবে জুটি বড় হওয়ার পরও মাত্র ৪ বলের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই দুই ব্যাটার।
মূলত মিরাজের ভুল এক শটেই ভাঙে তাদের ১৩৩ রানের পার্টনারশিপ। গ্যাভিন হোয়ের বলে ৪৬ রানে থাকা অবস্থায় প্রথমে কাভারে সহজ ক্যাচ দেন, কিন্তু হ্যারি টেক্টর সেটি ফেলে দেন। তবে সেই ভুলে সতর্কতা না নিয়েই দুই বল পর ফের আরও বড় শট খেলতে গিয়ে বালবার্নির হাতে ক্যাচ দেন মিরাজ। আর এক রানের বেশি এগোতে পারেননি মিরাজ, বিদায় নেন ৪৭ রানে।
ঠিক দুই বল পরই ফেরেন লিটনও। হাম্প্রেসকে সুইপ করতে গিয়ে টপ-এজড হয়ে স্লিপে থাকা পল স্টার্লিংয়ের হাতে চলে যায় বল। ১২৮ রানে শেষ হয় লিটনের দুর্দান্ত ইনিংস, যেখানে ৮ চার ও ২ ছক্কা হাঁকান ক্ল্যাসিক এই ব্যাটার। লিটনের পর দ্রুতই ফেরেন তাইজুলও। গ্যাভিন হোয়ের নিখুঁত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে মাত্র ৪ রান করেই সাজঘরে ফেরত যান এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।
এরপর মুরাদ আর এবাদতে সচল ছিল স্বাগতিকদের রানের চাকা। তবে দলীয় ৪৬৮ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মুরাদ। ২২ বলে ১১ রান করা এই স্পিনারকে এলবিডব্লিউ আউট করে নিজের পাঁচ উইকেট পূরণ করেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।
টাইগারদের শেষ ব্যাটার হিসেবে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন খালেদকেও। তাকে ফিরিয়ে নিজের ষষ্ঠ হোল পূরণ করেন আইরিশ স্পিনার ম্যাকব্রাইন।