বাংলাদেশ হারলো যেখানে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫২ AM
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যেন দেখা গেল এক টুকরো মিরপুর। লাল-সবুজ পতাকায় ছেয়ে যাওয়া গ্যালারি, সমর্থকদের গর্জনে এক সময় কেঁপে উঠেছিল পুরো মাঠ। শুরুতে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশের দিকেই ঝুঁকে আছে ম্যাচের ভাগ্য। কিন্তু সেই আনন্দ ধীরে ধীরে বদলে গেল তীব্র হতাশায়। অঘোষিত এই সেমিফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে দুর্দান্তভাবে শুরুতে চাপে ফেলেও শেষ পর্যন্ত ১১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে চতুর্থবারের মতো এশিয়া কাপ ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভেঙে গেল টাইগারদের।
পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ারপ্লে শেষে ২ উইকেটে মাত্র ২৭ রান তোলে। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দলটি যখন ধুঁকছে, তখন মনে হচ্ছিল ১০০ রানও ছাড়াবে না তাদের ইনিংস। কিন্তু বাংলাদেশের ফিল্ডারদের একের পর এক ক্যাচ মিস ও বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগে পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৩৫ রান তোলে।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ নেন ৩টি, রিশাদ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ নেন ২টি করে উইকেট। কিন্তু সেই সাফল্য কোনো কাজে লাগেনি, কারণ ব্যাটিংয়ের সময়ই সব গড়বড় হয়ে যায়।
মাত্র ১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন প্রথম ওভারেই শূন্য রানে আউট হন। এরপর মিডল অর্ডারে তাওহিদ হৃদয়, মেহেদী হাসান, নুরুল হাসান—কেউই নিজেদের ইনিংস গড়ে তুলতে পারেননি।
সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জাকের আলী। ৯ বলে মাত্র ৫ রান করে আউট হন একেবারে অপ্রয়োজনীয় একটি শটে। এমনকি পুরো টুর্নামেন্টে একটিও ছক্কা মারতে পারেননি এই ‘পাওয়ার হিটার’ ট্যাগধারী ব্যাটার।
শেষদিকে শামীম হোসেন কিছুটা লড়াই করলেও (২৫ বলে ৩০ রান), সেটি কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে। বাংলাদেশ ইনিংস থেমে যায় ৯ উইকেটে ১২৪ রানে। এমন হারের পর প্রশ্ন উঠছে—এই ম্যাচটা আদৌ পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে পেরেছিল বাংলাদেশ? পরিস্থিতি বুঝে খেলার চেষ্টা ছিল কোথায়?
ফিল্ডিং ব্যর্থতা, মিডল অর্ডারের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং, আর অধিনায়কের সিদ্ধান্তহীনতায় হাতছাড়া হলো একেবারে জেতার মতো একটি ম্যাচ। লিটন দাসের না থাকা আরও বেশি করে অনুভূত হয়েছে এই ম্যাচে।
এই জয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান—একটি ঐতিহাসিক ম্যাচ অপেক্ষা করছে ক্রিকেট ভক্তদের জন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (হারিস ৩১, নেওয়াজ ২৫, আফ্রিদি ১৯, সালমান ১৯, ফাহিম ১৪*, ফখর ১৩; তাসকিন ৩/২৮, রিশাদ ২/১৮, মেহেদী ২/২৮, মোস্তাফিজ ১/৩৩)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৯ (শামীম ৩০, সাইফ ১৮, নুরুল ১৬, রিশাদ ১৬*, মেহেদী ১১, তানজিম ১০; আফ্রিদি ৩/১৭, রউফ ৩/৩৩, সাইম ২/১৬, নেওয়াজ ১/১৪।
ফল: পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী।