গবেষণা প্রতিবেদন
বড় ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, ২০৫০ সালের মধ্যে বাস্তুহারা হতে পারেন ৯ লাখ মানুষ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৪ PM
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৯ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারাতে পারে। ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জলবায়ুর রিপোর্ট-২০২৫’ শীর্ষক এক গবেষণায় এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে নরওয়ে ও বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের যৌথভাবে করা এ গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) এবং নরওয়েজিয়ান মেটিরিওরোলজিকাল ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জলবায়ু’ শীর্ষক নতুন রিপোর্টে দেশের জলবায়ু সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পৃথিবীর জলবায়ু খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এর বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে, কারণ দেশটি সমতল, নদীনির্ভর, জনবহুল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত।
নতুন রিপোর্ট অনুযায়ী, যদি গ্রীনহাউস গ্যাস কমানো না যায়, তাহলে ২০৪১ থেকে ২০৭০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এছাড়া ২১০০ সালের মধ্যে দেড় থেকে সাড়ে ৪ ডিগ্রি বাড়তে পারে তাপমাত্রা। পাশাপাশি তাপপ্রবাহ আরও বেড়ে যাবে এবং দেশের পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় সারা বছরই তীব্র গরম থাকতে পারে।
এছাড়া দেশে বৃষ্টিপাতেরও পরিবর্তন হতে পারে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং শতাব্দীর শেষে মোট বৃষ্টিপাত গড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বাড়তে পারে। পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এসব অতিবৃষ্টির ফলে বন্যা ও ভূমিধসও বাড়বে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবী গরম হওয়ায় সমুদ্রের পানি ফুলে ওঠে ও বরফ গলে জল বাড়ে। এর ফলে বাংলাদেশে উপকূলীয় এলাকায় বন্যা বাড়বে। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৯ লাখ মানুষ স্থায়ী বন্যার কারণে জায়গা হারাতে পারে।
আরও পড়ুন: জামায়াত-এনসিপিসহ ৬ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু
জলবায়ুর এ পরিবর্তন মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবিকায় প্রভাব ফেলবে মারাত্মকভাবে। বেশি গরমে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি বাড়বে। আর তীব্র গরমে শ্রমিকদের কাজ করা কঠিন হবে এবং তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়বে। সমুদ্রের পানি বাড়লে লবণাক্ততা বাড়বে-ফসল, মাছ ধরা ও পানির উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন একদিনে থামানো যাবে না, এমনকি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমালেও কিছু পরিবর্তন হবে। কিন্তু গ্যাস ও দূষণ কমানো না গেলে ভবিষ্যতের ক্ষতি ভয়াবহ হবে। তাই দুইভাবে কাজ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো - দূষণ কমানো এবং ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি হিসেবে বাঁধ, আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি ও পূর্বাভাস পেতে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এইচ ই হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন, বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবীদ বজলুর রশীদসহ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা সেভ দ্য চিলড্রেনসের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।