ইয়াং এডুকেটরস সামিটে বক্তারা

প্রযুক্তি ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে

বক্তব্য রাখছেন নায়েমের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার
বক্তব্য রাখছেন নায়েমের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার  © টিডিসি ফটো

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নতুন প্রজন্মকে উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রযুক্তি শিক্ষণ নয়, শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির নৈতিক প্রয়োগ শেখানোর উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য সমন্বয় করতে হবে প্রযুক্তি ও মূল্যবোধের মধ্যে। শিক্ষা বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদদের এ সংক্রান্ত রূপরেখা প্রণয়নে নেতৃত্ব দিতে হবে।

আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) শিক্ষা অধিকার সংসদ আয়োজিত ‘ইয়াং এডুকেটরস সামিট-২০২৫’ এর ‘রিইম্যাজিনিং এডুকেশন ইন বাংলাদেশ টু পয়েন্ট জিরো: ভিশন টুয়েন্টি থার্টি অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক মূল অধিবেশনে অতিথিদের আলোচনায় এসব কথা উঠে এসেছে।

শিক্ষা অধিকার সংসদের আহ্বায়ক, আন্তর্জাতিক শিক্ষা-গবেষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মো. নিয়াজ আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে মূল অধিবেশনে অতিথি হিসেবে ছিলেন মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব খ ম কবিরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নুরে আলম সিদ্দিকী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রাজ্জাক, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার এবং জাতীয় পাঠ্যক্রম সমন্বয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. সুলতানা রাজিয়া।

বক্তৃতাকালে খ ম কবিরুল ইসলাম বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় ঢেলে সাজাতে মূল্যবোধ ও প্রযুক্তির সমন্বয়ের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, শিশুরা এখন স্কুলে যাচ্ছে না। উদ্বেগজনক হচ্ছে তারা কওমি মাদ্রাসায় যাচ্ছে। উদ্বেগের কারণ এই যে, কওমি মাদ্রাসায় তো চাকরি নেই। তাহলে অভিভাবকরা পাঠাচ্ছেন কেন? কারণ তারা মনে করছেন, স্কুলে তাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটছে না। এজন্য মূল্যবোধ এবং প্রযুক্তির সমন্বয় প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বলেন, কোন বয়সে কোন প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে, তা আমাদের ভাবতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় সম্প্রতি একটি নীতি গ্রহণ করেছে যে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অনেক ডিভাইস তারা দেবে না। অস্ট্রেলিয়াতে আমাকে এক গবেষক বলেছিলেন, অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে শিশুদের যোগাযোগ দক্ষতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

‘কাগজে–কলমে থাকলেও ল্যাবের যথাযথ ব্যবহার হয় কিনা, এটি প্রশ্নসাপেক্ষ। আমি নিজেও একটি স্কুলের সঙ্গে আছি, যেখানে ল্যাব শোপিস মাত্র, ব্যবহারের সুযোগ নেই। বরং ছাত্ররা প্রযুক্তিভীতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও শিক্ষকরা পেরেছেন বলে মনে হয় না। তাদের অনেক ট্রেনিংয়ের দরকার আছে’ -অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রাজ্জাক, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বুয়েট

এদিকে রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং শিক্ষক ও অভিভাবকদের নির্লিপ্ততা ও অবহেলার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ধসে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, আমরা চাকরি করি সবাই, আমাদের ভিতরে কোনো মোটিভেশন নাই। একই সাথে ভোগবাদিতায় লিপ্ত হয়ে গেছি। অভিভাবকদের কাছে জ্ঞান অর্জনের চেয়ে জিপিএ ৫ মুখ্য হয়ে গেছে। এ ছাড়া গত ১৫ বছরে শিক্ষা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যতটুকু বেঁচে আছে, তা ইনস্টিটিউশনাল না—ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু ক্ষেত্রে বেঁচে আছে। অর্থাৎ শিক্ষাব্যবস্থার সমস্ত অংশীজনের মধ্যে আমি শিক্ষার্থীদের দোষ কম দেব।

ঢাবির আইইআরের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম বলেন, শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে মানের দিকে নজর দিতে হবে। আমরা যদি মানের দিকে না তাকাই, তাহলে কোনো লাভ হবে না। প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আসছে, কিন্তু এ পড়াশোনা দিয়ে তারা যদি কিছু করতে না পারে, তাহলে সে শিক্ষা তার কাজে আসবে না।

17
সামিটে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন

শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন ডিজিটাল পাঠ্যক্রম, ই-লার্নিং, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অগ্রাধিকার। গ্রাম ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিগত শিক্ষা অনেক সীমিত। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৈষম্য, প্রযুক্তি সংকট এবং শিক্ষকদের দক্ষতার অভাব। এ সংকটগুলো দূর করতে পারলে অগ্রগতি হবে।

ধনী-গরিব এবং শহর-গ্রামের মধ্যে বৈষম্য রয়ে গেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম বলেন, আধুনিক গবেষণার অভাবে শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রমও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ফলে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমাদের অংশগ্রহণ কম। নতুন করে পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজন পাঠ্যক্রম ও শিক্ষণ পদ্ধতির আধুনিকীকরণ, শিক্ষায় প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সংযোজন এবং শিক্ষায় সৃজনশীলতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বিকাশ। তিনি বলেন, ভিশন ২০৩০–এ প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার সার্বজনীনতা। এরপর গুণগত মান বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং দক্ষতার সংযোগ। শিক্ষার মান তখনই বাড়বে যখন সমতা থাকবে। এজন্য আমাদের গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যালয় স্থাপন এবং যাতায়াত সহজ করতে হবে।

‘শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় আগ্রহী হয় না। ক্লাসে আসে না। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না, কারণ সে অনুভব করছে না স্কুলে তার কী কাজ। স্কুল তো পুরনো (ধাঁচের), বরং সে তার চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে।’ -ড. নুরে আলম সিদ্দিকী, সহযোগী অধ্যাপক, আইইআর, ঢাবি

‘ছাত্ররা প্রযুক্তিভীতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও শিক্ষকরা পেরেছেন বলে মনে হয় না’

অধিবেশনে বক্তৃতাকালে বিগত ১৫ বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাগজে-কলমে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও বাস্তবতা ভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রাজ্জাক। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে জেলা-উপজেলায় স্কুলগুলোতে আমরা ল্যাব স্থাপন করতে পেরেছি। কিন্তু কাগজে–কলমে থাকলেও এসব ল্যাবের যথাযথ ব্যবহার হয় কিনা, এটি প্রশ্নসাপেক্ষ। আমি নিজেও একটি স্কুলের সঙ্গে আছি, যেখানে ল্যাব শোপিস মাত্র, ব্যবহারের সুযোগ নেই। বরং ছাত্ররা প্রযুক্তিভীতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও শিক্ষকরা পেরেছেন বলে মনে হয় না। তাদের অনেক ট্রেনিংয়ের দরকার আছে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ বাড়ানোর ওপর জোর দেন নায়েমের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার। তিনি বলেন, আমাদের বাস্তবতা এবং আইরনিও বটে; এখন শিক্ষক যারা আছেন, যারা প্রশিক্ষণ নিতে আসেন, তারা ১৯ থেকে সর্বোচ্চ প্রাক-বিংশ শতাব্দীর প্রোডাক্ট। আমরা বড় হয়েছি ওই সময়ের মাইন্ডসেট (চিন্তাধারা) নিয়ে। আর যে প্রজন্মকে আমরা শেখানোর চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি, তারা ২১ শতকের শিক্ষার্থী। এক্ষেত্রে সময় একটি বড় প্রভাবক। কেননা প্রতি প্রায় তিন দিনে একটি নতুন জ্ঞান তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা ভৌত অবকাঠামোর দিক থেকে প্রযুক্তিকে দেখছি, কিন্তু এভাবে আসলে প্রযুক্তি-শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি না। আমার ক্লাসে যখন এআই থাকবে, বা হাইটেক ক্লাসরুম থাকবে, তখন আমাদের পদ্ধতি পরিবর্তন হবে। এ ছাড়া টিচার্স ট্রেনিংয়ে যে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, সেটি ফেইস টু ফেইস ক্লাসের উপযোগী। এ থেকে উত্তরণের পথগুলো খুঁজতে হবে আমাদের। এইটা আমাদের সাহায্য করবে না। টেকনিক্যালি এবং ক্যাপাসিটির জায়গায় নিতে হবে শিক্ষক ও প্রশিক্ষক উভয়কেই। তবে আমরা মূল্যবোধ এবং প্রযুক্তির কথা বলছি। এখানে একটা কনফ্লিক্ট (দ্বন্দ্ব) আছে। এটিকে কলাবরেশনে পরিণত করতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করেও তো মূল্যবোধকে প্রমোট করা যেতে পারে। এটি সরকারের দিক থেকেও রিয়ালাইজেশন এসেছে। কিছু কাজ হচ্ছে। তবে শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের সবাইকে মিলে একটা রূপরেখা দাঁড় করাতে হবে।

18
অতিথিদের ক্রেস্ট তুলে দেন আয়োজকরা

‘শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না, কারণ সে অনুভব করছে না স্কুলে তার কী কাজ’

এ বিষয়ে ঢাবির আইই‌আরের সহকারী অধ্যাপক ড. নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আমাদের কারিকুলামে বড় একটা ক্রাইসিস রয়ে গেছে। আমরা অনেক কিছু দিতে চেয়েছি শিক্ষার্থীদের কাছে, কিন্তু কোনো কিছুই দিতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা বায়োলজি কেন পড়বে, সেটা আমরা তাদের বুঝাতে পারি না। কেমিস্ট্রি তার কী কাজে লাগে, বলতে পারি না। এই ক্যানভাসটা তাদের কাছে তুলে ধরতে পারি না। ফলে তারা পড়াশোনায় আগ্রহী হয় না। ক্লাসে আসে না। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না, কারণ সে অনুভব করছে না স্কুলে তার কী কাজ। স্কুল তো পুরনো (ধাঁচের), বরং সে তার চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে।

এজন্য এই মুহূর্তে কারিকুলামের সংশোধন ও সংযোজন দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তি শিক্ষা কারিকুলামে যুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া প্রবলেম–বেইজড লার্নিংকে প্রমোট করতে হবে। এটিকে বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে হবে। তাহলে শিক্ষার্থীরা আসবে। এর সঙ্গে বেসিক সাবজেক্ট বাদ দেওয়া যাবে না। বেসিক সাবজেক্টের সঙ্গেই প্রযুক্তি ও এআই যুক্ত করতে হবে। একই সাথে তারা নৈতিকভাবে বা দক্ষতার সঙ্গে প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার করবে, সেটা শেখাতে হবে। শিক্ষণে প্যারাডাইম শিফট এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

‘গত রেজিমে যে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে কেউ চিন্তা করছে না’

জাতীয় পাঠ্যক্রম সমন্বয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. সুলতানা রাজিয়া তার বক্তব্যে শিক্ষণে প্রায়োগিক দিকের ওপর জোর দিয়ে বলেন, তাত্ত্বিক বা দার্শনিক বিষয় আমাদের থাকবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের তা প্রয়োগ করতে হবে। আমরা আনুভূমিকভাবে অনেক টপিক কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছি, কিন্তু পড়াতে পারছি না। তুরস্ক বর্তমানে ৩৫ শতাংশ বিষয় কারিকুলাম থেকে সরিয়ে ফেলে সেখানে ‘ডিফারেনসিয়েটেড টিচিং’ যোগ করেছে। একেকজনের একেক রকম শিক্ষা প্রয়োজন, এজন্য বাকিগুলো কমিয়ে ফেলেছে।

পাঠ্যক্রম সমন্বয় কমিটির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, কারিকুলাম বোর্ডে দেখলাম—জুলাই যুক্ত হলো কিনা, আগেরগুলো সরল কিনা—সবাই এটা নিয়ে কনসার্ন! কিন্তু গত রেজিমে যে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে চিন্তা করছে না। লার্নিং যে একটা প্রগ্রেসিভ প্রক্রিয়া, সেটা যদি না হয়, তাহলে কিভাবে অগ্রগতি হবে?

শিক্ষা ব্যবস্থার ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারিকুলামে ধর্মীয়, দার্শনিক, নৈতিক দিক সংযোজন ঠিক আছে, কিন্তু প্রায়োগিক বিষয়ে কিভাবে যাব? সবচেয়ে বড় কথা, শিক্ষার মিশন আর ভিশন কী হবে? যুক্তরাজ্যে মিশন-ভিশনে প্রথমে এসেছে স্পিরিচুয়ালিটি, তুরস্কে প্রথমে এসেছে ন্যাশনাল ইউনিটি। যাদের যা প্রয়োজন, তারা সেটিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছে। আমাদের মিশন-ভিশন কী হবে? এটা নির্ভর করছে সমাজের ওপর। ফ্রেমওয়ার্কের পরপরই আরও কয়েকটি ধাপ নিতে হবে। ২০২৭ সালের পর আমরা নতুন ফ্রেমওয়ার্কে যাব। ইউনেস্কোর সঙ্গে মিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) একটি রিসার্চ করছে। ইউনেস্কোর ফান্ডিংয়ে একটি গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আরও অনেক নিজস্ব গবেষণা প্রয়োজন।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নায়েম মিলনায়তনে এই সামিট শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এতে সারাদেশ থেকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ