এক মাসে ৭৪৩ দুর্ঘটনা: নিহত ৭৮০, আহত ১৯১৬

প্রতীকী
প্রতীকী  © সংগৃহীত

২০২৫ সালের জুন মাসে সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে সংঘটিত দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭৮০ জন, আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৯১৬ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ চিত্র ওঠে এসেছে। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে সংগঠনটি।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কপথে এ সময়ের মধ্যে ৬৭১টি দুর্ঘটনায় ৭১১ জন নিহত হন এবং আহত হন ১ হাজার ৯০২ জন। রেলপথে ঘটে ৫৪টি দুর্ঘটনা, যাতে প্রাণ যায় ৫৬ জনের এবং আহত হন ১৪ জন। এছাড়া নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ১৩ জন। সবমিলিয়ে জুন মাসজুড়ে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৭৪৩টি দুর্ঘটনায় ৭৮০ জনের মৃত্যু ও ১ হাজার ৯১৬ জন আহত হওয়ার তথ্য ওঠে আসে।

এছাড়া মোটরসাইকেল ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাহন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। মাসজুড়ে ২২৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪৪ জন এবং আহত হয়েছেন ২১২ জন। যা সড়ক দুর্ঘটনার মোট সংখ্যার ৩৩.৩৮ শতাংশ, নিহতের ৩৪.৩১ শতাংশ এবং আহতের ১১.১৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বিভাগভিত্তিক সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, যেখানে ১৬০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৭২ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৮৮ জন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা হয়েছে সিলেট বিভাগে, সেখানে মাত্র ২৫টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৬ জন এবং আহত ৪৫ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৩০টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১৮, আহত হয়েছেন ৩৯৭, খুলনা ৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৪, আহত হয়েছেন ১৪৭, বরিশালে ৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৯, আহত হয়েছেন ১৫৬, ময়মনসিংহ ৪৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬২, আহত হয়েছেন ১৬০, রংপুরে ৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮৭, আহত হয়েছেন ২০৯ এবং রাজশাহীতে ১০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১৩, আহত হয়েছেন ২০০ জন।

আরও পড়ুন: মেয়েদের জয়জয়কার, পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে

দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পেশাগত পরিচয়ও বিশ্লেষণ করে সংগঠনটি জানায়, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৫ জন পুলিশ সদস্য, ৫ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ১১৫ জন বিভিন্ন যানবাহনের চালক, ১০৪ জন পথচারী, ৮৪ জন নারী, ৪৫ জন শিশু, ৫৬ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮ জন শিক্ষক, ২ জন চিকিৎসক, ২ জন প্রকৌশলী এবং ১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

জুন মাসে সংঘটিত দুর্ঘটনায় জড়িত মোট ৯৭৪টি যানবাহনের মধ্যে ২৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ছিল মোটরসাইকেল, ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ বাস, ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ নছিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ ছিল কার, জিপ ও মাইক্রোবাস।

বিভিন্ন দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করে সংগঠনটি জানায়, ৪১ দশমিক ২৮ শতাংশ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটেছে গাড়ি চাপায়, ২৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মুখোমুখি সংঘর্ষে, ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি খাদে পড়ে, ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে নানা অন্যান্য কারণে, শূণ্য দশমিক ২৯ শতাংশ ক্ষেত্রে ওড়না পেঁচিয়ে এবং শূণ্য দশমিক ৭৪ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে ট্রেন ও যানবাহনের সংঘর্ষে।

প্রতিবেদনে সড়কের ধরন অনুযায়ী দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানেও বৈচিত্র্য দেখা গেছে। জাতীয় মহাসড়কে ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে, আঞ্চলিক মহাসড়কে ৩১ দশমিক ১৪ শতাংশ, এবং ফিডার রোডে ২৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মহানগরীতে ৪ দশমিক ০২ শতাংশ, চট্টগ্রাম মহানগরীতে শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং রেলক্রসিংয়ে শূণ্য দশমিক ৭৪ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence