‘শান্তিচুক্তি’র ২৩তম দিনে সংঘর্ষ জড়াল আইডিয়াল ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা

মারধরে এক শিক্ষার্থীর শার্ট ছিঁড়ে গেছে
মারধরে এক শিক্ষার্থীর শার্ট ছিঁড়ে গেছে  © টিডিসি

রাজধানীর তিন কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে ২৩তম দিনে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে ধানমন্ডি আইডিয়াল ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে আইডিয়াল কলেজের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় থেমে থেমে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা যায়, আইডিয়াল ও ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী একই বাসে করে গন্তব্য স্থানে যাচ্ছিল। যাওয়ার সময় বাসের ভেতরে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে তারা হাতাহাতিতে জড়ায়। পরবর্তী সময়ে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিতে এলে ঢাকা কলেজ সংলগ্ন উত্তরা ব্যাংকের সামনে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংশ্লিষ্টদের সৃত্রমতে, ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত কয়েকটি পেজের উসকানিমূলক পোস্টের মাধ্যমে সংঘর্ষ জড়িয়েছে দুই কলেজে শিক্ষার্থীরা। এদিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন উভয় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আইডিয়াল কলেজে শিক্ষার্থী বাধন মাহবুব বলে, ‘আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ ছুটির পর সায়েন্স ল্যাব এরিয়া দিয়ে যাচ্ছিল, তখনই তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়, যা খুবই ন্যক্কারজনক। এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে থাকে আমাদের সঙ্গে। এই বছর ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হওয়া কনসার্টে আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হলে শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিত হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের সঙ্গে কিছু একটা বিষয় নিয়ে মারামারি হয়। এরই পরিপেক্ষিতে ডিসিয়ান মিমস এবং ডিসিয়ান ফিক্সের অ্যাডমিনদের উসকানিতে আজকের এই ঘটনাটি ঘটে।’

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ হাফিজ বলেন, ‘ঢাকা-আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা একই বাসে করে তাদের নিজস্ব গন্তব্যে যাচ্ছিল। পরবর্তী সময়ে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখন আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে সক্ষম হই এবং সবাইকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেই। এখন শান্তিচুক্তির মাধ্যমে গঠিত ৯ সদস্যের কমিটির সহায়তায় বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চেষ্টা চলছে।’

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই তৎপর আছি। মারামারির সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, বিশেষ করে যে মার খেয়েছে, তার প্রতি আমাদের সমবেদনা এবং তার সম্পূর্ণ চিকিৎসার খরচ আমাদের। আর অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজকের এ ঘটনা হয়তো বা কনসার্টে ঘটে যাওয়া ঘটনাকেই কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। তবে সব পক্ষই যদি সংযত থাকে, তাহলে এধরনের সংঘাত এড়ানো সম্ভব।’

উল্লেখ, সংঘর্ষ এড়াতে চলতি বছরের ৯ নভেম্বরে পুলিশ ও কলেজ দুটির কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে তাদের মধ্যে মৌখিক ‘শান্তিচুক্তি’ হয়। সেখানে তারা ফুল ও মিষ্টি দিয়ে একে অপরকে বন্ধু হিসেবে গ্ৰহণ করে নেয়। আর কখনো কোনো প্রকার সংঘর্ষে জড়াবে না, এ  প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন উভয় কলেজের শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ