টুঙ্গিপাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধে মারধরে আহত কৃষকের মৃত্যু

মারা যাওয়া আলামিন শেখের স্বজনদের আহাজারি
মারা যাওয়া আলামিন শেখের স্বজনদের আহাজারি  © টিডিসি

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধে মারধরে আহত কৃষকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের মারধরে আহত হয়েছিল নারীসহ আরও ৪ জন।

গত বুধবার সকালে উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত কৃষক আলামিন শেখ (২৫) বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মৃত আলামিন শেখ মধুখালী গ্রামের আকবর আলী শেখের ছেলে। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মধুখালী গ্রামের হাসেম শেখের ছেলে ফাইজুল শেখ (৩০), আব্বাস শেখ (৩৫), নওয়াব শেখের ছেলে টিপু শেখের সাথে একই গ্রামের আকবর আলী শেখের ছেলেদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার সকালে আলামিন মধুখালী গ্রামের বিরোধপূর্ণ জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে ফাইজুল ও আব্বাস বাধা দেয়। তখন কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ফাইজুল ও আব্বাসের নির্দেশে টিপু শেখ ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে এসে আল-আমিনকে পেটাতে থাকে। পরে আলামিনের চিৎকারে বাড়ির লোকজন ঠেকাতে গেলে নারীসহ আরও ৪ জনকে পিটিয়ে আহত করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আলামিনকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ঢাকা রেফার করেন। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আলামিনের ভাই আহত ইসমাইল শেখ বলেন, ‘ডুমুরিয়া ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া মৌজায় এসএ দাগ ১৭৯১-৯২ দাগে ১১ কাঠা বাড়ির জমি ও বিলে ২ বিঘা ২ কাঠা জমি আমার পৈতৃক সম্পত্তি। কিন্তু আমার দাদার সৎভাই মোবারেক হোসেন আমাদের মাত্র ১ শতাংশ দিয়ে বাকি জমি নিজ নামে রেকর্ড করিয়ে নেয়। ২০০৮ সালে মোবারেক মারা যাওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হলে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলে সেই জায়গা ফেরত দেয়নি। পরে আমার বাবা আকবার আলী শেখ রেকর্ড সংশোধনের মামলা দেয়। সেই থেকে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এরপর যখন আমরা আমাদের জমি দখল নিতে চাই, তখন দেবোত্তরি সম্পত্তি দাবি করে হাসেম শেখের লোকজন আমাদের বাধা দেয়। সেই জমি নিয়েই আমার ভাইয়ের প্রাণ কেড়ে নিলো ওরা।’

নিহত আলামিনের স্ত্রী নুরনাহার বেগম বলেন, ‘আমার তিন ছেলে মেয়েকে ওরা এতিম করে দিলো। নির্মমভাবে আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করলো। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফাইজুল, আব্বাস ও টিপু শেখের বাড়িতে গেলে তাদের ঘরগুলো তালাবদ্ধ দেখা যায়। প্রতিবেশীরা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে তারা ঘর তালা মেরে কোথায় যেন চলে গিয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!