ময়মনসিংহের ফুলপুরে জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি মুছে ফেলায় ক্ষোভ

গোলচত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ (ডানে আগের অবস্থা) 
গোলচত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ (ডানে আগের অবস্থা)   © টিডিসি

ময়মনসিংহের ফুলপুরে বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের দেয়াল থেকে জুলাই আন্দোলনের সময় আঁকা গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় বৈষমবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, গ্রাফিতি নয়, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সেখানে থাকা নির্বাচনি পোস্টার অপসারণ করা হয়েছে।

সারা দেশের মতো জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন ময়মনসিংহের ফুলপুরের শিক্ষার্থীরা। তারা সড়কে বেরিকেড স্থাপন করে আন্দোলনকে দুর্বার রূপ দেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। আন্দোলনের শক্তি ও চেতনা ধরে রাখতে ফুলপুরের গোল চত্বরে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের বেদীতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উক্তি অংকন করেন। এর মধ্যে ছিল ‘পানি লাগবে কারো পানি’, ‘স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনবো’, ‘এক সাঈদ লোকান্তরে, লক্ষ সাঈদ ঘরে ঘরে’।

হেঁটে কিংবা কোনও যানবাহনে সামনে গেলে স্মৃতিস্তম্ভের বেদীতে আঁকা জুলাই গ্রাফিতি চোখে পড়ত। গত দু-তিন দিন আগে থেকে সেগুলো আর দেখা যাচ্ছে না। সেখানে সাদা রং করে দেওয়া হয়েছে। 

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ফুলপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র জুলাই যোদ্ধা সামাদ খান নাঈম বলেন, ‘২-৩ দিন ধরে দেখছি, আমাদের আঁকা জুলাই গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়েছে। কারা এ কাজটি করেছে জানি না। তবে তা খুব খারাপ হয়েছে। এটা আশা করিনি। আমরা আন্দোলনের ফাঁকে ফাঁকে এগুলো এঁকে ছিলাম। এখন ইচ্ছে করলেই তা আঁকা সম্ভব নয়।’

ময়মনসিংহ সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘কোনো কিছু মুছে দিয়ে নতুন করে লেখা প্রকৃত চেতনাকে ধারণ করে না। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা নিজের আঁকা-লেখার মাধ্যমে সাহস সঞ্চার করেছিলেন। তাই ইতিহাস মুছে দেওয়া কোনো ভাবেই কাম্য নয়।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ময়মনসিংহের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সোহাগ রানা বলেন, ‘কী কারণে কেন, কারা জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি মুছে দিয়েছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই। এমনটি হওয়ার কথা না। খোঁজখবর নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলব এ বিষয়ে।’

আলমগীর ইসলাম নামে বৈষমবিরোধী আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক বলেন, ‘গ্রাফিতি মুছে ফেলা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলা হবে। সেখানে আমাদের আবেগ জড়িয়ে ছিল। এখন নতুন করে গ্রাফিতি আঁকলেও আগের মত হবে না।’

এ বিষয়ে ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম সীমার জানান, জুলাই আন্দোলনের কোন গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়নি। তবে নির্বাচনি পোস্টার ছিল সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।

উপজেলা শহরের গোল চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের দেয়ালে কোনো গ্রাফিতি ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।

এ নিয়ে ক্ষোভ ধানা বাঁধলে ইউএনও নিজের ফেসবুক আইডি থেকে রাত ১২টার দিকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে লেখা হয়, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী গোলচত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পোস্টার অপসারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে আঁকা গ্রাফিতি ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়ায় মুছে ফেলা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর সেগুলো নতুন করে আঁকা হবে। এনিয়ে কেউ বিভ্রান্তির মধ্যে পড়বেন না।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence