চেয়ারম্যানের পুকুরে যাতায়াতে ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ
- নাটোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০০ PM
নাটোরের লালপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত পুকুর ও আড্ডাখানায় যাতায়াতের সুবিধার্থে একই স্থানে সরকারিভাবে দুই দফায় রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে জনবহুল কিংবা জরুরি রাস্তার বরাদ্দ না দিয়ে জনস্বার্থবিরোধী এই কাজে মোট ৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কোনো অংশই গ্রামবাসীর চলাচলের কাজে লাগছে না।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিপি) থেকে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে লালপুর উপজেলার ৮ নম্বর দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে রহমের বাড়ি থেকে তোফাজ্জল হোসেনের পুকুর পর্যন্ত একটি আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করা হয়। পরের বছর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একই জায়গায় আবারও এডিপি প্রকল্প দেখিয়ে আরও ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এইচবিবি রাস্তা নির্মাণের বরাদ্দ দেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, রাস্তা দুটি সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের ব্যক্তিগত পুকুরে গিয়ে শেষ হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কোনো অংশই গ্রামবাসীর চলাচলের কাজে লাগছে না।
এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, ইউনিয়নে বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকলেও শুধু চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সুবিধার্থে সরকারি বরাদ্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই পুকুরে পানি সরবরাহের জন্য একটি সরকারি সাবমারসিবল পাম্প ও পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে, যা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত পুকুর ও আড্ডাখানায় ব্যবহৃত হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে চেয়ারম্যান তোফা ওই রাস্তার শেষ মাথায় পুকুর পাড়ে ব্যক্তিগত আড্ডাখানার জন্য একটি ঘর তৈরি করেছিলেন। তিনি নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে সেখানেই আড্ডা দিতেন ও দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। আগস্টের ঘটনার পরে স্থানটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটি জনগণের জন্য করা হয়েছে।’
তবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যদি ব্যক্তিগতভাবে কোনো কিছু করে থাকি, সেটি নিশ্চয়ই অন্যায়।’