আপত্তিকর ভিডিও কল ভাইরালের পর এবার ছাত্রের মাকে কুপ্রস্তাব, বহিষ্কার জামায়াত নেতা
- ঝালকাঠি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০১ PM
এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের পর এক শিক্ষার্থীর মাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযুক্ত জামায়াত নেতার নাম হাফেজ মো. নুরুল্লাহ। তিনি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে এক অচেনা নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও কলের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এছাড়া সদর উপজেলার কৃষ্ণকাঠি এলাকার একটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার সময় এক ছাত্রের মায়ের (প্রবাসীর স্ত্রী) মোবাইলে নিয়মিত কুপ্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই ছাত্রের স্বজনরা নুরুল্লাহকে আটক করে মারধর করেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও ঘটনার ভিডিও ও জবানবন্দির কিছু অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবার ভাইরাল হয়ে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নুরুল্লাহ নিজেকে কখনো ইসলামিক বক্তা, কখনো সাংবাদিক এমনকি বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘মো. ফিরুজ আলম নুরুল্লাহ’ নামে আরেকটি পরিচয় পাওয়া গেলে একাধিক ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের অভিযোগও সামনে আসে।
একের পর এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও উপজেলা জামায়াত যৌথভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে নারী হয়রানি, নৈতিক অসঙ্গতি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়গুলো প্রমাণিত হলে প্রথমে তার পদ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বহিষ্কার করা হলো।
ঝালকাঠি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরিদুল হক জানান, “জামায়াতে ইসলামী নৈতিকতা ও শৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তার পদ স্থগিত করা হয়েছে।” পরে বিষয়টি আরও বড় আকারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীলরা জরুরি বৈঠকে নুরুল্লাহকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, “অনৈতিক আচরণের অভিযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওর বিষয়টি পর্যালোচনা করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” তবে তিনি দাবি করেন, মাদরাসাকেন্দ্রিক কিছু ব্যক্তিগত বিবাদের কারণে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটনাগুলো প্রচার করেছে এবং নুরুল্লাহকে মারধর করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাফেজ নুরুল্লাহর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।