কক্সবাজার সৈকতে ৪৫ ফুটের দানব!
- কক্সবাজার প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ AM
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে স্থাপন করা হয়েছে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে নির্মিত বিশাল ‘প্লাস্টিক দানব’ ভাস্কর্য। সমুদ্র থেকে উঠে আসা দানবের আকৃতির এই ৪৫ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্যটি তৈরি হয়েছে প্রায় ১০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে। এর মাধ্যমে উপকূলে প্রতিনিয়ত জমতে থাকা প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা তুলে ধরে জনসচেতনতা বাড়ানোই মূল লক্ষ্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের পাঁচজন শিল্পী, অন্তু, আবীর কর্মকার, উচ্ছ্বাস, নির্জর ও রিয়াজরা ১৫ দিন ধরে ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন। নির্মাণে প্লাস্টিকের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয়েছে বাঁশ, কাঠ, পেরেক ও আঠা। শিল্পীরা জানান, দানবের ভয়ংকর রূপের মাধ্যমে মানবসৃষ্ট দূষণের বিপদকে স্পষ্ট করতেই এমন নকশা করা হয়েছে।
প্রতিদিন কক্সবাজার সৈকতে আসা হাজারো পর্যটকের অসচেতনভাবে ফেলে যাওয়া বোতল, পলিথিন ও খাবারের প্যাকেট শেষ পর্যন্ত সমুদ্রে গিয়ে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করছে এ বার্তাই জোরালোভাবে তুলে ধরছে প্রদর্শনীটি।
আরও পড়ুন: প্রশংসাপত্র ও নম্বরপত্র আটকে ২২ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
ঢাকা থেকে আগত নাজমুল করিম জানান, ‘এই দানব যেন পুরো পৃথিবীকে চূর্ণ করে ফেলতে চাইছে এটাই তার বার্তা। অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার আর বেপরোয়া ফেলে দেওয়া আমাদের পরিবেশকে মারাত্মক বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
সুগন্ধা পয়েন্টের স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ বলেন, ‘পর্যটকরা এখানে এসে ভাস্কর্যটি দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছে। এতে তারা সৈকতে প্লাস্টিক না ফেলার ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যবসাও উপকৃত হবে, কারণ পরিষ্কার সৈকতেই পর্যটক বেশি আসে।’
গতবারের ন্যায় এবারও উদ্যোগটি নিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সংস্থাটির পরিচালক জামাল উদ্দিন জানান, ২০২২ সাল থেকে তারা কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন উপকূল থেকে প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন প্লাস্টিক সংগ্রহ করে রিসাইকেল করেছে; গত চার মাসে আরও ৮০ মেট্রিক টন বর্জ্য সরানো হয়েছে। তিন মাসব্যাপী এ প্রদর্শনীতে থাকবে ভাস্কর্য, চিত্রকর্ম ও সচেতনতামূলক গান পরিবেশনা।
গতকাল বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ‘প্লাস্টিক দানব’ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আবদুল্লাহ মান্নান। তিনি বলেন, সমুদ্রসৈকতকে প্লাস্টিক দূষণ থেকে রক্ষায় এই উদ্যোগ অত্যন্ত কার্যকর ও প্রশংসনীয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল আলম ও বিচ ম্যাজিস্ট্রেট আজিম খান।