বালিকা বিদ্যালয়ের ওয়াশরুমে পুরুষ শিক্ষক, অতঃপর...
- সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০২ PM
সাতক্ষীরার নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই শিক্ষক ছাত্রীদের ওয়াশরুমে প্রবেশ করে ভয়ভীতির মধ্যে ফেলে দেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বিরতির পর শেষ ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখন সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে মেয়েদের বাইরে আসতে বলেন। একে একে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এলেও ভেতরে থাকা এক ছাত্রী যখন দরজা খুলে বের হয়, তখন তাকে ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে যায়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগেও সিরাজুল ইসলাম ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। কখনো গায়ে হাত দিয়ে মেরেছেন, আবার কখনো অশালীনভাবে কথা বলেছেন, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, সিরাজুল ইসলাম প্রায়ই ওয়াশ ব্লকে যান চুল ঠিক করতে। তিনি একজন পুরুষ শিক্ষক হয়েও মেয়েদের গায়ে হাত দিয়ে মারেন, যা একেবারেই অনৈতিক।
তারা বলে, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীদের অনুরোধেই তারা বিষয়টি প্রকাশ করেছে। ‘আমরা তো শিগগিরই স্কুল ছাড়ব, কিন্তু ওরা তো থাকবে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী সময়ে আরও ভয়ানক কিছু হতে পারে’, বলে এক শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিরাজুল ইসলাম ইংরেজি শিক্ষক হলেও বিদ্যালয়ের বাইরে তার একাধিক কোচিং ব্যাচ রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভেতরেও প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজের কোচিং সেন্টারে পাঠানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ আছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এটা স্কুলের বিষয়। আপনি হেড স্যারের সঙ্গে কথা বলুন। আমি অসুস্থ ছিলাম, এ জন্য ওখানে গিয়েছিলাম।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজী বলেন, ‘এর আগে কোচিং বাণিজ্য নিয়ে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। তখনই আমি সবাইকে কোচিং করতে নিষেধ করি। আজ শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি, প্রয়োজনে ম্যানেজিং কমিটিকেও জানানো হবে।’
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মুহা. আবুল খায়ের বলেন, ‘আমার অধীনে সাতক্ষীরায় ৭৩০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এক নবারুণে যদি সপ্তাহে একবার করে যেতে হয়, তাহলে অন্যগুলো চালাব কীভাবে? সভাপতিকে বলেন, তারপর না হলে আমরা দেখব।’