যশোরে ২৩ এইডস চিকিৎসা কেন্দ্রে ১৬ মাস বেতন বন্ধ
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫১ PM
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এইচআইভি চিকিৎসাকেন্দ্রে (এআরটি সেন্টার) বতর্মানে চিকিৎসাধীন আছেন ২৪৫ জন। এই সেন্টারে রোগীদের নিয়মিত কাউন্সিলিং ও চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সন্দেহভাজন রোগীর এইচআইভি এইডস শনাক্তে পরীক্ষা করা হয়। শুক্রবার বাদে সপ্তাহে প্রতিদিন এইচআইভি চিকিৎসা কেন্দ্রের সেবা দেওয়া হয়। এই কেন্দ্রসহ সারা দেশের ২৩টি এইচআইভি এইডস চিকিৎসা কেন্দ্রে কর্মরত ৬৫ জন কর্মী ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। নিয়মিত বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন মহামারি নিয়ন্ত্রণে কাজ করা এসব কর্মীরা। বেতন না পেলেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে জাতীয় এইডস/এসটিভি কন্ট্রোলের সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশের সরকারি হাসপাতালে ২৩টি এইচআইভি এইডস চিকিৎসা কেন্দ্র (এআরটি সেন্টার) চালু রয়েছে। এসব কেন্দ্রে কাউন্সিলর মনিটরিং অফিসার, কাউন্সিলর কো-অর্ডিনেটর, কাউন্সিলর কাম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, মেডিকেল টেকনোলজি (ল্যাব) পদে ৬৫ জন কর্মরত আছেন। প্রত্যেকটি সেন্টারে কাউন্সিলিং ও এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৪টি সেন্টারে কাউন্সিলিং ও পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
বর্তমানে দেশের ১৪টি সেন্টারে প্রায় ৮ হাজার এইডস রোগী চিকিৎসাধীন। বিপুলসংখ্যক রোগীর দ্বারা সংক্রমণ রোধ ও তাদের নিয়মিত চিকিৎসার আওতায় রাখার মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ করছেন ২৩টি এআরটি সেন্টারের কর্মীরা। ২০২৪ সালের জুন থেকে বিভিন্ন পদে কর্মরত ৬৫ জনের বেতন বন্ধ রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হবে নাকি একই খাতে চলমান থাকবে, সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে ১৬ মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। বেতন না পেয়েও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা। বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।
একাধিক রোগী বলেন, ‘নিয়মিত সেবা পাচ্ছি বলেই বেঁচে আছি। কোনো কারণে আমরা ভুলে গেলেও কাউন্সিলর মনে রাখেন। তিনি ফোন করে খোঁজ নেন। ওষুধ সেবন ও বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেন। তারা আমাদের সেবা দিচ্ছেন। কিন্তু নিয়মিত বেতন পান না শুনে খারাপ লাগছে। তাদের বেতন দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি এইডস চিকিৎসা কেন্দ্রের কাউন্সিলর কাম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুদেব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘২০২৪ সালের জুন থেকে আমাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু আমাদের কাজ থেমে নেই। কষ্ট হলেও আমরা নিয়মিত কাজ করছি। প্রতিদিন রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত বেতন চালু হলে আমাদের কষ্ট লাঘব হবে।’
হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগবিশেষজ্ঞ এবং এইচআইভি এইডস চিকিৎসা কেন্দ্রের ফোকাল পারসন ডা. কানিজ ফাতেমা অ্যানি বলেন, ‘এইচআইভি পজিটিভ রোগীদের জন্য কাউন্সিলিং ও চিকিৎসা সেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকারি প্রকল্পের আওতায় কর্মরত কাউন্সিলর ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা দীর্ঘদিন বেতন পাচ্ছেন না। বেতন ছাড়াই কাজ করা কঠিন। মানবিক দিক বিবেচনায় দ্রুত বেতন ভাতা পরিশোধ করা জরুরি। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।’
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মন্তব্য করতে রাজি হননি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোলর পরিচালক ডা. মো. খায়রুজ্জামান।