প্লাস্টিক পণ্যের ভিড়ে সংকটে মাদারীপুরের বেত শিল্প
- মাদারীপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৩ AM
হারিয়ে যাচ্ছে মাদারীপুরের বেতশিল্প। অথচ বেতের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা একসময় ছিল ব্যাপক। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও রফতানি হত এই বেতের নানান পন্য। সেই শিল্পের ঐতিহ্য এখন হারাতে বসেছে। প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের মতো সস্তা পণ্যের প্রতিযোগিতার কারণে বেত শিল্পের চাহিদা কমে গেছে। এছাড়া, কাঁচামালের দুষ্প্রাপ্যতা এবং পণ্যের উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অনেক কারিগর তাদের পূর্বপুরুষদের এই পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন বা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এই কারণে ঐতিহ্যবাহী বেত শিল্পও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের শিবচরের বেল্লাল বেপারী দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মাদারীপুর পৌর শহরে পাবলিক লাইব্রেরির পাশে সুইট হোম নামের একটি বেতের দোকানের তিনি কারিগর। তার
বেতের তৈরি ম্যাগাজিন র্যাক, টেলিফোন চেয়ার, সোফাসেট, বেড সেট, স্যুজ র্যাক, ট্রলি, টেবিল, চেয়ার, ফোল্ডিং চেয়ার, কর্নার সোফা, ইজি চেয়ার, ডায়নিং চেয়ার, বেবি কট ও নবাব সেটসহ রকমারি ফার্নিচার বিক্রি এবং প্রদর্শন করা হয়েছে।
কিন্তু রাঙ্গামাটি বান্দরবান খাগড়াছড়ি থেকে বেশি টাকা দিয়ে বেত কিনে এনেও যেরকম এই শিল্প জিনিসপত্র বেচাকেনা হওয়ার কথা। ও সেরকম না হয় চিন্তার ভাঁজ করেছে কপালে। কিন্তু শিল্পকে বাঁচাতে প্রয়োজন সরকারের সাহায্য সহযোগিতা। তাই সরকার চাইলে এ বেত শিল্পকে জাগিয়ে তোলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কারিগর বেল্লাল বেপারী
এদিকে যারা কোনো রকমে টিকে আছেন তারা বলছেন, প্লাস্টিক পণ্যের ভিড়ে বতর্মানে শৈল্পিক কারুকাজ ও দৃষ্টিনন্দন নিপুণ হাতে বেতের আসবাবপত্র ও ফার্নিচারের জনপ্রিয়তা বাড়লেও উৎপাদন বাড়ছে না।
এদিকে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া বেত শিল্পের জিনিসপত্রকে ধরে রাখার আহ্বান ক্রেতা স্হানীয় বাসিন্দা ও কারিগরদের। স্থানীয় বেত ব্যবসায়ী রিপন বলেন, এক সময় অনেক বেচা কেনা হতো এই পণ্যের অনেক কদর ছিল এখন আর আগের মত বেচাকেনা হয় না। ভাবছি এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাব।
কালকিনির আরেক বেত শিল্প কারিগর সহিদুর রহমান বলেন, 'বেতগুলো দেশে শেষ প্রান্ত থেকে কিনে এনে তৈরি করতে হয় বেতের বিভিন্ন শিল্প। কিন্তু আগের মতো চলে না বিধায় এখন আর এ ব্যবসায় লাভ হচ্ছে না।'
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয় শাবাব বলেছেন, 'এই বেত শিল্পকে টিকে রাখার জন্য সরকারিভাবে নেওয়া হবে উদ্যোগ। সরকারিভাবে তাদেরকে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। তাহলে তারা এ পেশার পাশাপাশি অন্য পেশাও করতে পারবে।'